বাংলাদেশের শ্রমিক ও মালয়েশিয়ার নিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় প্রবাসী শ্রমিক নিয়োগে দেশ দুটির সরকারের মধ্যে সই হওয়া সমঝোতা স্মারকের বিস্তারিত প্রকাশ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল মালয়েশিয়া (টিআইএম)।
শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকার। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণসহ সম্ভাব্য সব দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুই দেশের সরকারের প্রতি তা প্রকাশ করার আহ্বান জানায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া চ্যাপ্টার।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার এ আহ্বান জানিয়েছে তারা।
সম্প্রতি দুই দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে টিআইবি ও টিআইএম। তারা বলছে, ‘বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সিদের (বিআরএ) একটি অংশ মালয়েশীয় সহযোগীদের সহায়তায় দেশটিতে প্রবাসী কর্মী নিয়োগকে কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা করছে।’
এমন শঙ্কা থাকার পরেও দুই দেশের সরকার এই সমঝোতা স্মারকের বিষয়বস্তু ও শর্ত প্রকাশে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করে টিআইবি ও টিআইএম।
এই গোপনীয়তা দুই দেশের সরকারের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের পরিপন্থী বলেও দাবি করেছে সংস্থাটির দুই চ্যাপ্টার।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে টিআইবি ও টিআইএম বলছে, ‘বাংলাদেশে দেড় হাজারেরও বেশি আগ্রহী ও আইনিভাবে অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে। তার পরেও মাত্র ২৫টি বিআরএ ও তাদের প্রত্যেকের অধীনে ১০টি করে সাব-এজেন্ট প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ দেয়ার পরিকল্পনা প্রকাশ পেয়েছে।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান ও টিআইএমের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মোহন জানান, সমঝোতা স্মারকের বিষয়বস্তু নিয়ে গোপনীয়তার ফলে কারসাজির সুযোগ তৈরি হয়েছে। এটি শুধু এজেন্সি নির্বাচনের উন্মুক্ত প্রতিযোগিতাকে লঙ্ঘন করবে না, জবাবদিহিতার সুযোগকেও সীমিত করবে।
এর ফলে বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকের অভিবাসন ব্যয় ও মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তাদের কর্মী নিয়োগ ব্যয় বাড়িয়ে দেবে বলেও মনে করেন তারা।
জনসাধারণের তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সমঝোতা স্মারকটি বিশদভাবে প্রকাশের আহ্বান জানান তারা।