৫ বছর বয়সী অন্তিক শর্মা ঋদ্ধি। অপলক চোখে তাকিয়ে আছে বাবা রক্তিম শীলের দিকে। কবে বাবার জ্ঞান ফিরবে জানে না সে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবার পাশে বসে অপেক্ষার প্রহর গুনছে ছোট্ট শিশু অন্তিক।
দুরন্তপনায় সারা দিন কাটানো ঋদ্ধি আজ চুপচাপ। তবে বাবার কথা জানতে চাইলে ঋদ্ধি জানায়, ‘ভোরে বাবা আমাকে ঘুমে রেখে কাকা আর পিসিদের নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। বাবা এখনো কথা বলছে না আমার সঙ্গে। আমাকে আজ চকলেটও কিনে দেয়নি।’
বাবার জ্ঞান ফেরার অপেক্ষায় অন্তিক এখনো জানে না বেঁচে নেই তার পাঁচ কাকা। শুধু বলছে কাকারা দিদার কাছে গেছে বাড়িতে।
১০ দিন আগে গত হয়েছে ঋদ্ধির ঠাকুর দাদা সুরেশ চন্দ্র। মঙ্গলবার তারই শ্রাদ্ধ করতে গিয়ে কক্সবাজারের মালুমঘাটে পিকআপচাপায় প্রাণ হারান পাঁচ কাকা। তাদের সঙ্গেই গুরুতর আহত হন তার বাবা রক্তিম শীল। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন তিনি।
হাসপাতালে আসা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সন্তানের জনক রক্তিম শীল পেশায় ব্যবসায়ী। ৮ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। অন্য ভাইদের মধ্যে আর্থিকভাবে কিছুটা সচ্ছল তিনি। পাঁচ ভাইয়ের মৃত্যুর পর তাকে যেকোনো মূলে ফিরে পেতে চান স্বজনরা।
তার পিসাতো ভাই মুনি শর্মা নিউজবাংলাকে জানান, রক্তিম এখনও জানেন না তার ৫ ভাই কেউই বেঁচে নেই। অনেক অভাব আর কষ্টের সংসার তাদের। পরিবারে কিছুটা সচ্ছলতা এনেছে রক্তিম। তার চিকিৎসার জন্য আমরা আত্মীয়স্বজন সবাই এগিয়ে এসেছি।
এ সময় তিনি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘চকরিয়ায় যে জায়গায় দুর্ঘটনা হয়েছে এখানে বহুলোক প্রাণ হারিয়েছে। সরু এক সড়কে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো হয়। এত এত প্রাণের বিনিময়ে নিরাপদ হয়নি সড়কটি। যার স্বজন হারায়, একমাত্র সেই বুঝে এর কষ্ট।’