লক্ষ্মীপুরের বিএডিসি প্রকল্পের একটি বোরো সেচ প্রকল্প চালু নিয়ে দুই ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন। প্রথম চিঠিতে সেচ পাম্প চালুর অনুমতি দিলেও পরের চিঠিতেই তিনি ওই আদেশ বাতিল করেন।
এতে চলতি মৌসুমে সদর উপজেলার মান্দারীর পশ্চিম গন্ধব্যপুর এলাকায় প্রায় ২৬ একর জমিতে ধানের আবাদ অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়নের আওতাধীন ওই প্রকল্পটির ম্যানেজার স্থানীয় কৃষক ইসমাইল হোসেন।
এই সেচ প্রকল্পের আওতাধীন জমির কৃষক মমিন উল্যা, খলিল মিয়া, শাহ আলম, মফিজ উল্যা ও আব্দুস সহিদসহ অনেকেই জানান, আরও দুই সপ্তাহ আগেই চারা লাগানোর সময় ছিল। তাদের বীজতলার চারাগুলো এখন প্রায় নষ্ট ও ঝলসে গেছে। এতে তারা ফলন কম পাবেন।
ভুক্তভোগী কৃষকরা দাবি করেন, ইসমাইলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ওই এলাকার মহিউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। অথচ মহিউদ্দিন কৃষকই নন। প্রকল্পটি ইসমাইলের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেই অভিযোগটি করেন তিনি।
বিএডিসি এবং কৃষি কর্মকর্তাদের তদন্তেও উঠে আসে বিষয়টি। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উপজেলা সেচ প্রকল্পের সভাপতি ও ইউএনও মো. ইমরান হোসেন ইসমাইলকে সেচ স্কিম চালুর নির্দেশনা দিয়েও পরে তা প্রত্যাহার করে নেন।
স্থানীয় বিএডিসি কার্যালয়ে ভুক্তভোগী কৃষকগণ
ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘ইউএনও ২০ জানুয়ারি স্কিম চালু করার চিঠি দেন। সবকিছু ঠিক করে পাম্প চালু করতে গেলে মহিউদ্দিন বাধা দেন। পরে ইউএনও আরেকটি চিঠি দেন পাম্প চালু না করার জন্য। কিন্তু কৃষকরা চাচ্ছে আমি যেন পাম্প চালু করি।’
এদিকে মহিউদ্দিন বলেন, ‘ম্যানেজার ইসমাইল ঠিকমতো পানি দিত না। সে অতিরিক্ত টাকা আদায় এবং কৃষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তাই কৃষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি অভিযোগটি করেছি।’
বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মামুন বলেন, ‘আমরা সেচ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছি। কৃষকরা তাদের জমিতে পানি চাচ্ছে। কিন্তু প্রকল্প ম্যানেজার ইসমাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় সে সেচ পাম্প চালু করতে পারছে না। তবে তদন্তে ইসমাইলের তেমন কোনো দোষ পাইনি।’
মান্দারি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সহিদ বলেন, ‘ইসমাইল একজন কৃষক। সে গত বছর থেকে পানি দিয়ে আসছে। কিন্তু অভিযোগকারী মহিউদ্দিন প্রকৃত কৃষক নন।’
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান ইমাম বলেন, ‘বিষয়টির সমাধান হলেই কৃষকরা চাষাবাদ শুরু করতে পারবে।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেচ কমিটির সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘ইসমাইলের আবেদনের ভিত্তিতে সেচ পাম্প চালানোর নির্দেশনা দিয়েছি। কিন্তু আরেকটি অভিযোগের কারণে পাম্প বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিই। দুই-এক দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।’