নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালনে সত্যিকারের সাহসী ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, বিচারপতি নাজমুন আরা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়ার নাম প্রকাশ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে করা সার্চ কমিটির সমালোচনা করেন তিনি।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মাওলানা ভাসানীর কাগমারী সম্মেলন দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালনে যোগ্য মনে করেন এমন কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের অনেক রাজনৈতিক দল ইসি কমিশনার হিসেবে নাম এখনও মনস্থির করেননি। বিএনপি বলেছে নাম দেবে না। তবে কয়েকটা নাম আপনারা বিবেচনায় আনতে পারেন।’
‘ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, যিনি আগে নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। তাকে চিফ ইলেকশন কমিশনার করা হলে..., উনি পথঘাট চেনেন। ওনার সঙ্গে আমাদের প্রাক্তন সেনাপতি ইকবাল করিম ভূঁইয়া, একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে তার সুনাম আছে। এ ছাড়া বিচারপতি নাজমুন আরা, সুলতানা কামাল এ জাতীয় ব্যক্তি আরও নিশ্চয়ই আছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সত্যিকারের সাহসী ও সজ্জন ব্যক্তিকে দিলে হয়তো নির্বাচন কিছুটা সুষ্ঠু হতে পারে।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সার্চ কমিটিতে যাদের নাম এসেছে তারা তাদের সম্পদের হিসাব দেননি। তাদের ওপরে মানুষের আস্থা থাকবে কী করে। তাদের পকেটে কি কাগজ আছে?’ এমন প্রশ্ন তোলেন ডা. জাফরুল্লাহ।
নির্বাচন কমিশন কেমন হওয়া উচিত সে প্রসঙ্গে মত দেন তিনি। বলেন, ‘আজকে যদি প্রকৃত নির্বাচন করতে হয়, গণতন্ত্রকে ফেরত দিতে হয়, জনগণের ভোটের অধিকারের জন্য শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দরকার। বর্তমান নির্বাচন কমিশন আইনে সে ব্যবস্থা নাই।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জাতীয় সরকার করুন আর সর্বদলীয় সরকার করুন। তাদেরকে দুবছর সময় দিতে হবে। তাহলেই সংবিধানের কতগুলো ত্রুটি আছে সেগুলো সংশোধন হবে।’
তিনি বলেন, ‘এককেন্দ্রিকতা দিয়ে কখনও দেশ চলতে পারে না। বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ। দেশকে ১৭-১৮টি প্রদেশে বিভক্ত করা দরকার।’
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তবে জালেম কখনও ক্ষমতা ছাড়ে না, তাদেরকে ক্ষমতা ছাড়াইতে হয়। আজকে বিএনপি তাদের অফিসে কোনো সভা-সমাবেশ করতে পারছে না। সেখান থেকে তাদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কাজেই তাদের (বিএনপি) উচিত যেদিন ধরে নিয়ে যাবে তার পরের দিনে আরও বড় পরিসরে আন্দোলনের ডাক দেয়া। কারণ যারা জালেম তারা কখনও ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাদের পতন হয়।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় অসুস্থবোধ করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। এ কারণে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ভেবে কাজ করতাম, আমাদের ব্যক্তিত্বের সংকট বলি, দেশের জনগণের কথা বলি, মানুষের কষ্টের কথা বলি সে রকম কিছু হতো না। আজ কী করে বলছেন সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য চাই। ওনারা দুটি আলাদা জোট, আপনারা তৃতীয় আলাদা একটা জোট করেন। তাহলে বিরোধী দল আলাদা হয়ে যাবার কারণে শক্তি দুর্বল হয়ে যাবে? বরং ভালো করে বোঝেন, আমরা সেইভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি যাতে মূল লড়াইটা দুর্বল না হয়। মূল লড়াই যেন শক্তি পায়। সেই বিবেচনায় ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি।’