চট্টগ্রামে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেল করার প্রস্তাব দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ। এ ছাড়া চলতি বছরের মধ্যেই মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ শেষ করার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে মেট্রোরেলের সমীক্ষার বিষয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ওই প্রস্তাব করেন। কোরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) অনুদানে ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে এ সমীক্ষার কাজ।
মন্ত্রী বলেন, ‘পুরাতন চট্টগ্রাম হিসেবে খ্যাত সদরঘাট, চকবাজার ও বহদ্দারহাট এলাকায় জনবসতি ঘন৷ এসব গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ভূ-পৃষ্ঠের ওপর মেট্রোরেল করার জায়গা নেই। যদিও মাটির নিচে মেট্রোরেলের নির্মাণ খরচ ওপরের চেয়ে তিনগুণ বেশি।’
মেট্রোরেলের সঙ্গে কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীর যুক্ত করার প্রস্তাব জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একনেকের সভায় মেট্রোরেলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেহেতু কর্ণফুলী নদীর ওই পারে শিল্পায়ন হচ্ছে প্রচুর, টানেল হয়ে গেছে। তাই ওই পারে কীভাবে মেট্রোরেল নেয়া যেতে পারে, তা বিবেচনা করা উচিত। এসব বিষয় মাথায় রেখেই পরিকল্পনা করতে হবে।’
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন।
উন্নয়নকাজের জন্য ভূমির বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করার বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশ ছোট, জায়গার মাল্টিপল ব্যবহার করতে হবে। আমার জায়গা এ জন্য আমি কাউকে দেব না- এমন মনমানসিকতা পোষণ করলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করা কঠিন। এমন হলে চট্টগ্রামের উন্নয়ন তথা দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।’
মতবিনিময় সভায় সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী। এখানে অবশ্যই মেট্রোরেল করা প্রয়োজন। তবে উন্নয়ন করতে গিয়ে ভোগান্তি হলে জনগণ বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানায়। সে জন্য সমন্বয় করেই মেট্রোরেলের কাজ করতে হবে।’
সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন উন্নয়ন প্রকল্পে সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তোলেন।
সভায় মতামত প্রকাশ করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল মালেক, যুগ্ম সচিব মাহবুবুর রহমান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল আলম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মাহবুবুল আলম।
সভায় কোইকা প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন কোইকার ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর তেনিয়ান কিম।