সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় শহর হলেও বরিশালে নেই কোনো উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এতে পরিকল্পিত কোনো বড় উন্নয়ন সম্ভব হয়নি নগরটিতে। তাই এবার এ অঞ্চলে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করতে যাচ্ছে সরকার।
বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের খবরে খুশি নগরবাসী। অপরিকল্পিত নগরায়ন এড়াতে এটি জরুরি বলে মনে করছেন তারা।
২৫ জানুয়ারি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখার উপসচিব লুৎফুন নাহারের সই করা চিঠিতে ১৬ পৃষ্ঠার বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০২২-এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। খসড়া আইনটি সর্বসাধারণের মতামতের জন্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।
খসড়া আইনের বলা আছে, কর্তৃপক্ষ গঠনে চেয়ারম্যান, সরকার মনোনীত চারজন সদস্য, জেলা প্রশাসক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রতিনিধি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পদ মর্যাদার একজন প্রতিনিধি, বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ২১ জনকে নিয়ে বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে।
এ দিকে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সাধুবাদ জানিয়ে বরিশালের গবেষক আনিসুর রহমান খান স্বপন বলেন, ‘নগরীতে প্রতিনিয়ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে অপরিকল্পিত নগরায়নও। রাস্তা ছাড়াই ভবন গড়েছেন অনেকেই।
‘৫ তলার প্লানে আটতলা ভবন করতেও দেখা গেছে অনেককে। এ ছাড়া যেখানে সেখানে পরিকল্পনা ছাড়া বা সৌন্দর্য তোয়াক্কা না করেই ঘনবসতিও গড়ে উঠেছে। এসব নিয়ন্ত্রণে বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আরও অনেক আগেই দরকার ছিল। আশা করি, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাজ দ্রুত শুরু হবে।’
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, ‘বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হচ্ছে এ খবরটি খুশির। এতে জনপ্রতিনিধিরা নাগরিকদের যে জিম্মিদশার মধ্যে ফেলে সেটি একেবারেই কমে যাবে।
‘নাগরিকরা সরাসরি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করতে পারবে। এতে সিটি করপোরেশনের উপরও চাপ কমবে। নগরের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।’
নাগরিক সমাজ বরিশালের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘১৯৮৫ সালে বরিশাল পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। ২০০২ সালে এটি সিটি করপোরেশন হলেও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন না হওয়ায় নগরবাসীর ক্ষোভ রয়েছে। তাই বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আরও আগেই দরকার ছিল।’
বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশের ক্রমবর্ধমান শহরগুলোতে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নগরবাসীর জন্য সরকারের উপহার বলে মনে করছি। এর মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে বরিশাল বিভাগ অন্যতম একটি অধ্যায় হওয়ার সুযোগ পাবে।’