পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের কাছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর এটি উদ্বোধন করা হলেও চালু হয়নি এখনও। তবে অরক্ষিত অবস্থায় হলের সামনের অংশটি। প্রবেশপথেই রিকশাস্ট্যান্ড। সন্ধ্যা হলেই সেখানে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের আবাসিক হল চালু হওয়ার আগেই যেন রিকশাস্ট্যান্ড ও মাদকের আড্ডা সরানো হয়।
সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রী হলের গেটের সামনে থেকে প্রায় ৫০ মিটার জায়গাজুড়ে রিকশা ও ভ্যান রাখা হয়েছে। দিনের বেলাতেই সেখানে এলাকার বখাটেদের জটলা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘করোনার কারণে আমরা অনেক দিন বাড়িতে ছিলাম। ঢাকায় এসে আমরা কৌতূহলবশত পাঁচ বান্ধবী হল দেখতে আসি। দূর থেকে দেখি ভ্যান-রিকশায় বসে থাকা লোকজন আড্ডা দিচ্ছেন আর ধূমপান করছেন। এমন অবস্থা দেখে আমরা আর ভেতরে প্রবেশ না করে ফিরে আসি।’
একই পথে বাংলাবাজার সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয় শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদেরও। শারমিন আক্তার নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। আমি ও আমার মেয়ে এসেছি বই নিতে। গত মাসে আমরা গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম বেড়াতে, গতকাল ঢাকায় এসেছি এবং আজ বই নিতে আসলাম। গেটের সামনে এমন অবস্থার কারণে আমাদেরও নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমার বাসা কাছেই, তবু এদের জন্য মেয়েকে একা ছাড়তে ভয় করে। মাঝে মাঝে এরা উত্ত্যক্ত করে।’
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এর আগেও কয়েকবার তাদের এখান থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। আমি সকালে গিয়ে হলে যে গাছ লাগানো হয়েছে সেটা দেখে আসি, তখন তাদের দেখা যায় না। রাত হলেই তারা এখানে এসে আড্ডা দেয় এবং মাদক সেবন করে। আর হলটি আমরা এখনও বুঝে পাইনি। হলের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়ে গেছে, তবে প্রকল্প পরিচালক আমাদের এখনও হল হস্তান্তর করেনি। তাই আমরা কিছু করতে পারছি না। তবে হল চালু হওয়ার আগেই গেটের সামনে সিসি ক্যামেরা এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বাল্ব দেওয়া হবে, যাতে কেউ এখানে এসে আর আড্ডা দিতে না পারে।’
হলে কবে নাগাদ ছাত্রীরা উঠতে পারবে জানতে চাইলে প্রভোস্ট বলেন, করোনার কারণে সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরই হলে ছাত্রী উঠানো হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রী হলের চৌহদ্দির মধ্যে যত্রতত্র রিকশা-ভ্যান রাখা ও সেখানে অনৈতিক কাজকর্ম যারা করে, তাদের বিরুদ্ধে আমি অতি দ্রুতই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাতে আমরা নিয়মিত টহল দেই। ধরা পড়লে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’