করোনা মহামারির কারণে গত বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে হয়নি। চলতি বছরেরও এই দুটি পাবলিক পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে হবে না।
সাধারণত প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও গত বছর করোনা মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গত বছর এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হয় প্রায় ৯ মাস পর নভেম্বরের মাঝামাঝি আর এইচএসসি পরীক্ষা হয় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
চলতি বছরের জুনে এসএসসি এবং আগস্টের শেষে বা সেপ্টেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ পরিকল্পনা সামনে রেখে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির একাধিক সদস্য।
আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নেহাল আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে জুনে এসএসসি এবং আগস্টের শেষে বা সেপ্টেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার। তবে পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর।’
২০২৩ সাল থেকে নির্ধারিত সময়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আশাবাদী অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
বলেন, ‘আশা করি ২০২৩ সাল থেকে আমরা আগের মতো ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পারব। এর কারণ হলো আগামী দুই মাসের মধ্যে আমাদের সব শিক্ষার্থীর করোনাভাইরাস প্রতিরোধী দুই ডোজ টিকা দেয়া হয়ে যাবে।’
কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘একটা সংক্ষিপ্ত সিলেবাস দেয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে যে সিলেবাস দেয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করা উচিত। আর কয়টি বিষয়ের ওপর পরীক্ষা নেয়া হবে, তা নির্ভর করবে করোনা পরিস্থিতির ওপর। এখনই তা বলা সম্ভব নয়।’
করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হয় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। শুধু গ্রুপভিত্তিক (বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্যসহ অন্যান্য গ্রুপ) তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে সময় ও নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা হয়েছে। চতুর্থ বিষয়েরও পরীক্ষা নেয়া হয়নি। শুধু সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে আবশ্যিক বিষয় এবং চতুর্থ বিষয়ের নম্বর ফলে যোগ করা হয়।
করোনা সংক্রমণ রোধে গত ১৩ জানুয়ারি থেকে ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। এরপর ২১ জানুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধসহ নতুন করে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপিরষদ বিভাগ। তাতে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর আরও দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দেড় বছর পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও চালু করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে ক্লাস হয়েছে সীমিত পরিসরে। প্রতিদিন সব শ্রেণিতে ক্লাসও নেয়া হয়নি।