বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘পেপারলেস’ হচ্ছে চট্টগ্রাম সিটির রাজস্ব বিভাগ

  •    
  • ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২০:২৯

রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এতদিন ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং ট্যাক্সের জন্য আমাদের কাছে আসতে হতো। এখন পোর্টালের মাধ্যমে সহজেই মিলবে এসব সেবা।’

চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার পাইকারি ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ী আবু জাহের। গত বছরের জুনে শুরু করেন ব্যবসা। পরের মাসে দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযানে এলে, ট্রেড লাইসেন্স না থাকায় তাকে গুনতে হয় আর্থিক জরিমানা। এরপর লাইসেন্স করতে তৎপর হন তিনি।

তবে অভিজ্ঞতা না থাকায় পোহাতে হয় ভোগান্তি। সপ্তাহখানেক সিটি করপোরেশনের রাজস্ব সার্কেল অফিসে আসা-যাওয়ায় অর্থ ও সময় অপচয় হয় তার। এরপর হাতে পান ট্রেড লাইসেন্স।

শুধু ট্রেড লাইসেন্স নয়, হোল্ডিং ট্যাক্স ইস্যু ও নবায়নের ক্ষেত্রেও এ ধরনের বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হতো। অবশেষে এমন পরিস্থিতির অবসান হতে চলছে।

সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, নাগরিক সেবা আরও সহজ করতে অটোমেশনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে এখন থেকে ঘরে বসেই ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং ট্যাক্স সেবা পাবেন নগরবাসী।

এ লক্ষ্যে পুরোপুরি অনলাইনে যাচ্ছে করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের বড় এই খাতটি। ‘ই-রেভিনিউ ম্যানেজমেন্ট’ নামে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই পরিচালিত হবে ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং ট্যাক্সসংক্রান্ত যাবতীয় কাজ।

চলতি সপ্তাহেই চালু হবে এ সুবিধা। ওয়েবসাইট তৈরিতে ব্যয় হচ্ছে ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

তিনি জানান, করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ওয়েবসাইটটি তৈরি করছে ‘এটিএন অ্যান্ড আরকে সফটওয়্যার লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি উদ্বোধনের পর থেকে আগামী ১ বছর এর রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার কাজও করবে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া সার্বিকভাবে সমন্বয়ের কাজ করবে করপোরেশনের আইটি বিভাগ।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের’ অধীনে এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশের সাত সিটি করপোরেশনের মধ্যে এর আগে ২০১৮ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে পরীক্ষামূলকভাবে রাজস্ব সেবার এ অটোমেশন সিস্টেম চালু হয়।

ঢাকার পর এবার চট্টগ্রাম সিটিতেও এই ই-রেভিনিউ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাস্তবায়িত হচ্ছে। যদিও এর আগে সাবেক মেয়র মঞ্জুরুল আলমের সময়ে এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু নানা কারণে সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি৷

এই ওয়েবসাইট থেকে নগরবাসী কী কী সুবিধা পাবেন এবং তার জন্য কী করতে হবে তারও ব্যাখ্যা দেন নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, ই-রেভিনিউ ম্যানেজমেন্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নতুন ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন এবং হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে পারবে। অনলাইনে রাজস্ব সেবা পেতে প্রথমে ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি অনলাইনে জমা দিলে মিলবে একটি ট্র‍্যাকিং নম্বর। যার মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং ট্যাক্স ই-সেবা আবেদনের সর্বশেষ স্ট্যাটাস জানা যাবে। এ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করে ১-২ দিনের মধ্যেই আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে মেসেজ করে জানিয়ে দেয়া হবে।

রাজস্ব বিভাগের অনুমোদনের পর ওয়েবসাইটে ঢুকলেই মিলবে কাঙ্ক্ষিত ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং ট্যাক্স সনদের ই-কপি।

তবে কেউ চাইলে সার্কেল অফিসে এসেও একই পদ্ধতিতে ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং ট্যাক্সের সেবা নিতে পারবে। নগরীর ৪১ ওয়ার্ড ৮টি রাজস্ব সার্কেলের কার্যালয়েই মিলবে একই সেবা।

ওয়েবসাইটটি চালু হওয়ার পর সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানটির ২৪ জন কর্মকর্তা ৮ সার্কেল অফিসে ই-রেভিনিউ বাস্তবায়নে রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে একযোগে কাজ করবেন। তবে এটির নিয়ন্ত্রণ করপোরেশনের আইটি বিভাগের কাছেই থাকবে বলে জানিয়েছেন আইটি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুরো ওয়েবসাইটটি তদারক করবে আইটি বিভাগ। কারিগরি ও রক্ষণাবেক্ষণ সহায়তা দেবে বেসরকারি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানটি। চলতি সপ্তাহে এটি উদ্বোধন করা হবে। প্রাথমিকভাবে ডাচ বাংলা ব্যাংক দিয়ে রাজস্ব ফি পেমেন্ট করতে পারবেন। পর্যায়ক্রমে নগদ, সোনালী ব্যাংক, ব্র‍্যাক ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংকের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করা যাবে।’

করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগসংশ্লিষ্টরা বলছেন অটোমেশন পদ্ধতির ফলে নগরবাসীর সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই মিলবে রাজস্ব সেবা। পাশাপাশি সহজেই জানা যাবে মেয়াদোত্তীর্ণ ট্রেড লাইসেন্স ও বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্সের হালনাগাদ তথ্য। ফলে রাজস্ব আদায়ে গতি আসবে।

সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আদায়ে ওয়েবসাইটি নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এতদিন ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং ট্যাক্সের জন্য আমাদের কাছে আসতে হতো। এখন এই পোর্টালের মাধ্যমে সহজেই মিলবে এসব সেবা।

‘সাতটি ব্যাংক ও নগদের মাধ্যমে করা যাবে অনলাইন পেমেন্ট। এ পদ্ধতির ফলে পেপারলেস যুগে প্রবেশ করছে রাজস্ব বিভাগ।’

এ বিভাগের আরো খবর