বৈরী আবহাওয়ায় সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও তিন জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে পাঁচ জেলের মরদেহ উদ্ধার হলো। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৯ জেলে।
সুন্দরবনের দুবলার চরের ২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের নীলাবয়া এলাকা থেকে রোববার রাতে ও সোমবার সন্ধ্যায় এবং সুন্দরবনের আলোরকোলসংলগ্ন বঙ্গোপসাগর থেকে সোমবার দুপুরে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
মৃত জেলেরা হলেন বাওয়ালী বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার বগা গ্রামের ইয়াকুব আলী বাওয়ালী, একই উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামের আনোয়ার হোসেন বাদল। তাৎক্ষণিকভাবে একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
বাগেরহাট পূর্ব বন বিভাগের দুবলা শুঁটকি পল্লি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় নিউজবাংলাকে আনোয়ার ও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করলেও ইয়াকুবের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য তাদের কাছে নেই বলে জানিয়েছেন।
মৃত ইয়াকুবের ভাইয়ের ছেলে ইব্রাহিম আমানি জানান, রোববার রাতে বঙ্গোপসাগরের নীলাবয়া এলাকায় মাছ ধরছিলেন জেলেরা। এ সময় জেলেদের জালে ইয়াকুব আলীর মরদেহ উঠে আসে। পরে ভোরে মরদেহ নিয়ে বাগেরহাট কেবি বাজারের উদ্দেশে রওনা দেন জেলেরা। দুপুরে লাশ নিয়ে কেবি বাজারে পৌঁছান তারা।’
টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘দুবলার চর থেকে ট্রলার নিয়ে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যান জেলেরা। সোমবার দুপুরের দিকে সাগরে এক জেলের মরদেহ ভাসতে দেখে সেটিকে উদ্ধার করে সুন্দরবনের আলোরকোলের চরে নিয়ে আসেন তারা।
‘এ ছাড়া সন্ধ্যায় অজ্ঞাত আরও এক জেলের মরদেহ উদ্ধার করেছেন জেলেরা। যেটি এখনও আলোরকোলে পৌঁছায়নি। পৌঁছালে তার পরিচয় জানা যাবে।’
ইয়াকুবের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য তাদের কাছে নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে তার স্বজনরা আমাদের না জানিয়েই বাগেরহাট নিয়ে গেছেন।’
প্রহ্লাদ চন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে বঙ্গোপসাগরের দুবলার চর থেকে ২৫ নটিক্যাল মাইল গভীর সাগরে মাছ আহরণে থাকা ১৮টি ট্রলার ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়।
এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় দুবলার চরের দক্ষিণে ডুবোজাহাজ চর এলাকা থেকে দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করেন অন্য জেলেরা। মৃতরা হলেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কালিগঞ্জ গ্রামের মামুন শেখ ও পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার ধানখালী গ্রামের শেখ ইসমাইল হোসেন।
ঝড়ের পর রাত থেকেই সম্মিলিতভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন কোস্টগার্ড, বন বিভাগ ও জেলেরা। শনিবার দুপুর পর্যন্ত শতাধিক জেলেকে উদ্ধার করে দলটি।
সোমবার সন্ধ্যায় প্রহ্লাদ চন্দ্র নিউজবাংলাকে জানান, ডুবে যাওয়া ১৮টি ট্রলারের মধ্যে সুন্দরবনের দুবলার জেলে পল্লির দুটি ও অন্যান্য জেলার পাঁচটিসহ মোট সাতটি মাছ ধরা ট্রলারের সন্ধান এখনও মেলেনি। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন ৯ জেলে।
তবে ঘটনার পর বাংলাদেশ ফিশিং বোট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী জানিয়েছিলেন, ঝড়ের কবলে ট্রলার ডুবেছে ৩২টি। এর মধ্যে ১২টি বরগুনার। বাকি ২০টি বাগেরহাট ও পিরোজপুর এলাকার।