ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে দুই ভোটার গিয়ে জানতে পারলেন তাদের ভোট দেয়া হয়ে গেছে। পরে তারা মন খারাপ করেই কেন্দ্র থেকে চলে যান।
হারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
তারা হলেন উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুল মালেক ও নাছির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মজিদ।
ভোটার আব্দুল মালেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেন্দ্রে যাওয়ার পর পোলিং কর্মকর্তারা আমাকে বলেছেন আপনার ভোট হয়ে গেছে। আর ভোট দেয়ার সুযোগ নেই। পরে আমি আঙুল দেখিয়ে বলি, আঙুলে কালির দাগ নেই, তাহলে ভোট দিলাম কখন। পরে তারা কেন্দ্র থেকে চলে যেতে বলেন।’
তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে অন্য ভোটারদের সামনে লজ্জায় পড়তে হয়েছে। আগে জানলে ভোট দিতেই আসতাম না।’
একই পরিস্থিতির শিকার আরেক ভোটার আব্দুল মজিদ বলেন, ‘নির্বাচন এলে উৎসব মনে হয়। বাড়ির সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রে এসেছি। অন্যরা ভোট দিলেও আমি কেন্দ্রের ভেতর গেলেই বলা হয় ভোট দেয়া হয়ে গেছে। অথচ আমি ভোট দিইনি। এ নিয়ে কিছুক্ষণ বাকবিতণ্ডাও করেছি, কিন্তু সমাধান হয়নি। পোলিং এজেন্টরা বলেছে বাইরে না গেলে সমস্যা হবে। পরে বাধ্য হয়ে ভোট না দিয়েই চলে আসি।’
তিনি বলেন, ‘নাগরিক হিসেবে ভোট দেয়া আমার অধিকার। যে বা যারাই আমার ভোট দিয়েছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনলেই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আব্দুল ফারুক বলেন, ‘ভোটার এলে অবশ্যই ব্যালট পেপার দেয়া হবে। না দেয়ার তো প্রশ্নই আসে না। তবে একজনের দুবার ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
ভোট দিলে আঙুলে কালির দাগ থাকবে না কেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ওই দুজন আমাকে ভোট না দেয়ার বিষয়ে কিছু জানাইনি। ভোট দিলে অবশ্যই আঙুলে কালির দাগ থাকবে। হয়তো অন্য কোনো ধরনের সমস্যা থাকতে পারে।’
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত জাল ভোট দেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগও দেয়নি। আশা করছি, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট শেষ করা সম্ভব হবে।’
সপ্তম ধাপে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
উপজেলার ১১ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৮১ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৪৬ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪২২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৮১ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০ জন ও নারী ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৬২০ জন। তা ছাড়া এখানে ট্রান্সজেন্ডার একজন ভোটারও রয়েছেন।