মেয়াদ শেষ হয়ে আসায় বিদায় নিতে দিন গুনছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদাসহ অন্য কমিশনারদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। এরই মধ্যে নতুন ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেছেন ছয় সদস্যের একটি সার্চ কমিটি।
সেই কমিটি আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ইসি গঠনে নাম চেয়ে পাঠিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ব্যক্তিগতভাবেও কেউ চাইলে নাম প্রস্তাব দিয়ে জীবনবৃত্তান্ত জমাও দিতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশন গঠনে যখন এমন তোড়জোড় ঠিক সে সময়ে হঠাৎ করেই পদত্যাগ করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আবুল কাসেম।
নির্বাচন কমিশনার হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন তিনি, আগামী ইসির কমিশনার হতে পারেন এমন কথা চাউর হয়েছে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন আবুল কাসেম। পত্রটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ইসি সচিবালয়।
আবুল কাসেম দুই বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে ইসিতে কর্মরত ছিলেন।
কমিশনার হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জয়েন্ট সেক্রেটারি একটি ছোট পোস্ট। এরপরে এডিশনাল সেক্রেটারি আছে, সেক্রেটারি আছে, সিনিয়র সচিব আছে। ভাই আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।’
ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-১ অনুবিভাগের দায়িত্বে ছিলেন আবুল কাসেম। কঠোর গোপনীয়তায় তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে শুনেছেন তারা। তিনি নির্বাচন কমিশনার হতে যাচ্ছেন- এমনটিই তাদের জানিয়েছেন।
মন্ত্রিপরিষদের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেউ চাইলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্বাচন কমিশনার হওয়ার জন্য জীবনবৃত্তান্ত দিতে পারেন।
নিজ থেকে আপনি জীবনবৃত্তান্ত দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে কাসেম বলেন, ‘প্রশ্নই ওঠে না। আমি নিজে থেকে একটি পোস্টের জন্য কখনো বলতে পারি না।’
আপনি কমিশনার হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন এটা কি শুধুই গুঞ্জন, তখন তিনি বলেন, ‘তা আমি বলতে পারি না।’
সরকার চাইলে তো যে কাউকে এই পদে নিয়োগ দিতে পারে- এমন কথা জানালে কাসেম বলেন, ‘হ্যা, গভর্নমেন্ট চাইলে তো যে কাউকে নিয়োগ দিতে পারে।’
যদি আপনার নাম প্রস্তাব করে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না, প্লিজ।’
আবুল কাসেম ১৯৯০ সালে ২৪ মার্চ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশনে যোগ দেন। ওই বছর নভেম্বর সহকারী সচিব হিসেবে ইসি সচিবালয়ে যোগ দেন।
ক্রমান্বয়ে পদোন্নতি পেয়ে তিনি ইসির যুগ্ম সচিব হন। ২০২০ সালে তার চাকরির বয়স শেষ হলে সরকার তাকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়।
২০১৯ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ছিলেন আবুল কাসেম।
২০২০ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাধারণ নির্বাচনেও রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।