পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত আরও এক রুশ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত আট দিনে সেখানে পাঁচ রুশ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চার জন এবং সিঁড়ি থেকে পড়ে এক জনের মৃত্যু হয়।
রোববার দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, ভোরোটনিকভ আলেকজান্দ্রা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ‘নিকিম’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। তিনি রূপপুরে বিদেশিদের জন্য নির্মিত সাহাপুরের নতুনহাট গ্রিনসিটি আবাসিক প্রকল্পের একটি কক্ষে থাকতেন।
দুপুরের দিকে তার ফ্ল্যাটের কক্ষে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন এক সহকর্মী। পরে গ্রিনসিটি ও রূপপুর প্রকল্পসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খবর দেয়া হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আলেকজান্দ্রার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে দুই রুশ নাগরিকের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে একজন সিঁড়ি থেকে পড়ে আর অপরজন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি ঘুমের মধ্যে মারা যান শাকিরভ আলেক্সেইয় নামে একজন। ২৮ জানুয়ারি ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বারচেনকো আলেক্সেইয়ের।
দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রেটি নির্মাণ করছে রাশিয়া। ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের এই প্রকল্পের প্রায় ৯০ ভাগ টাকা ঋণ দিয়েছে রাশিয়া। আন্তঃরাষ্ট্রীয় কয়েকটি চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করছে রাশিয়ান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট।
২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ও ২০২৫ সালে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে একই পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা।
বিশাল এই প্রকল্পের কাজে যুক্ত দেশটির কয়েক হাজার নাগরিক। বলাবলি হয়, পাবনার রূপপুরে একখণ্ড রাশিয়া তৈরি হয়েছে।
সেখানে বেশ কিছু দোকান তৈরি হয়েছে, যেখানে রুশ ভাষায় সাইনবোর্ড দেখা যায়। স্থানীয়দের মধ্যে রুশ শেখার প্রবণতাও তৈরি হয়েছে দেশটি থেকে আসা হাজারো মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য। রুশরাও বাংলা শিখছেন।