অগ্নি নিরাপত্তার বিভিন্ন সরঞ্জাম আমদানিতে শুল্ক বৈষম্য প্রত্যাহার চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটি।
রোববার এফবিসিসিআইয়ের অগ্নি নিরাপত্তা, দুর্যোগ ও বিস্ফোরণ সম্পর্কিত স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে এ দাবি তোলা হয়।
বৈঠকে জানানো হয়, বর্তমানে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিতে ফায়ার ডোর, ফায়ার অ্যালার্ম ক্যাবল ও হোস রিল আমদানিতে ৫৮.৬ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এছাড়া গেট ভাল্ব আমদানিতে দিতে হয় ৩৭ শতাংশ, ফায়ার পাম্প ও ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেমে (ডিটেক্টর) ২৬.২ শতাংশ, ফায়ার এক্সটিংগুইশার ১১.০৫ শতাংশ ও এবিসি ড্রাই পাউডারে ৩১ শতাংশ কর দিতে হয়। বিদেশে ভাবমূর্তি রক্ষায় সরকার শুধু তৈরি পোশাক খাতকে উল্লিখিত হারের শুল্ক থেকে হ্রাস করা শুল্কের সুবিধা দিয়ে অগ্নি নিরাপত্তা সরঞ্জাম আমদানির সুযোগ দিয়েছে। দেশে অন্যান্য খাতের অগ্নি দুর্ঘটনার বিষয়টি এখানে গুরুত্ব পায়নি।
অগ্নি নিরাপত্তা সরঞ্জাম আমদানিতে পোশাক খাতের মতো সমান সুবিধা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটি।
এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির চেয়ারম্যান মো. নিয়াজ আলী চিশতি বলেন, ‘দেশে নিরাপদ শিল্পায়ন নিশ্চিত করতে সব খাতের কারখানাতে অগ্নি প্রতিরোধী ব্যবস্থা থাকা জরুরি। কিন্তু প্রয়োজনীয় এসব সরঞ্জাম আমদানিতে পোশাক শিল্প বাদে অন্যান্য শিল্পোদ্যোক্তাদের উচ্চ কর দিতে হচ্ছে।’তিনি জানান, উচ্চ করের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পক্ষে অনেক সময় পর্যাপ্ত অগ্নি প্রতিরোধী ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তৈরি পোশাক শিল্পের মতো সব খাতকে সমান সুবিধা দেয়ার দাবি জানান তিনি।
তিনি জানান, কার্বন ডাই অক্সাইড, ফোম, ড্রাই পাউডারসহ অন্যান্য আগুন প্রতিরোধী গ্যাস ও রাসায়নিক আমদানিতে আলাদা অনুমতির দরকার হয়। এসব পণ্য আমদানিকারকদের অযথা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ‘এখন শিল্পের নিরাপত্তার সময় এসেছে। কারখানায় অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্ট্যান্ডিং কমিটিকে একটি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।’
এসময় সহ-সভাপতি আমদানিকারকদের দেশেই অগ্নি নিরাপত্তা সরঞ্জাম তৈরির উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ আবু মোতালেব বলেন, ‘কারখানায় আগুন লাগার পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে। কিন্তু সবার আগে মালিককে দোষারোপ করা হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটি কারখানায় অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিতে সমস্যা চিহ্নিত ও করণীয় ঠিক করে একটি নীতিমালা শিগগিরই এফবিসিসিআইয়ের কাছে জমা দেবে।’
বৈঠকে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি সাব কমিটিও গঠন করা হয়।
এফবিসিসিআইয়ের সেফটি কাউন্সিলের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহীদুল্লাহ জানান, শিগগিরই এফবিসিসিআইয়ের উদ্যোগে শিল্পখাতে নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ শুরু হবে। এজন্য এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে অগ্নি নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব সনদ ও অনুমতিপত্রর জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস স্থাপনের চিন্তা চলছে।বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হারুন অর রশীদ, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান মো. ওয়াহিদ উদ্দীন, মোহাম্মেদ শাহজাহান, আবুল হোসাইন, এম মাহমুদুর রশীদ, জাকির উদ্দীন আহমেদ, মোহাম্মদ শামসুল হক জামিল, মুহাম্মদ আওলাদ হুসাইন রাজীব, মোহাম্মদ মনজুর আলম, তানজির আহম্মেদ তুহিনসহ অন্য সদস্যরা।