বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘প্রার্থীরা ক্ষমতার দাপট দেখাতে ব্যস্ত’

  •    
  • ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৯:৪৩

সাতকানিয়ার চরতি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বকতিয়ার হোসেন বলেন, ‘যা পরিস্থিতি দেখছি, আমরা আদৌ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারব কি না নিশ্চিত না। প্রার্থীরা ক্ষমতার দাপট দেখাতে ব্যস্ত। না জানি নির্বাচনের দিন কী অবস্থা হয়।’

রাত পেরোলেই সপ্তম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোটগ্রহণ। এই ধাপে সোমবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ১৬ ইউনিয়নে ভোট হবে। এর মধ্যে চার ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকে টানা সংঘাতে নির্বাচন নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন সাতকানিয়ার সাধারণ মানুষ। ভোটের দিন বড় ধরনের সহিংসতার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

সংঘাতের শঙ্কা প্রকাশ করে চরতি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বকতিয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যা পরিস্থিতি দেখছি, আমরা আদৌ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারব কি না নিশ্চিত না। প্রার্থীরা ক্ষমতার দাপট দেখাতে ব্যস্ত। না জানি নির্বাচনের দিন কী অবস্থা হয়।’

সোনাকানিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা পারভেজ উদ্দিন বলেন, ‘এটা আসলে নির্বাচন, নাকি মারামারির কোনো ইস্যু বোঝা মুশকিল। নিজেদের মধ্যে এভাবে সংঘাত সৃষ্টি করে মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টির কোনো মানে হয়?’

এরই মধ্যে প্রায় সব কয়টি ইউনিয়নেই নির্বাচন ঘিরে সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এসব সহিংসতায় একজনের প্রাণহানিসহ অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন।

সংঘাত শুরু হয় প্রতীক বরাদ্দের দিন ২৩ জানুয়ারি। এদিন রিটার্নিং কর্মকর্তার সামনে সংঘর্ষে জড়ান নলুয়া ইউনিয়নে নৌকার লিয়াকত আলী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান চৌধুরীর সমর্থকরা। এতে লোহাগাড়া থানার এক সহকারী উপপরিদর্শকসহ পাঁচজন আহত হন।

পরদিন সোনাকানিয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিম চৌধুরীর প্রচারণায় নৌকার প্রার্থী জসীম উদ্দিনের সমর্থকদের হামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১৫ জন সমর্থককে পিটিয়ে আহত এবং ১০টি গাড়ি ভাঙচুরের কথা বলা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ২৭ জানুয়ারি খাগরিয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী জসীম উদ্দিনের প্রচারণায় গুলি চালান নৌকার প্রার্থী আকতার হোসেন ও তার সমর্থকরা। এতে ১৩ জন গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করছেন জসীম উদ্দিন।

৩ জানুয়ারি এক নির্বাচনি সভায় নিজের দুটি অস্ত্র সব সময় লোড থাকে বলে প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখেন নৌকার প্রার্থী আকতার। পরদিন বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন। অস্ত্র উদ্ধারে স্বতন্ত্র প্রার্থী জসীমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার নৌকার প্রার্থীর লাইসেন্স করা একটি পিস্তল ও একটি শটগান জব্দ করে পুলিশ।

আমিলাইশ ইউনিয়নের পূর্ব আমিলাইশে ২৮ জানুয়ারি স্বতন্ত্র প্রার্থী এইচ এম হানিফের প্রচারে হামলা চালিয়ে ১৫ জনকে আহত করা হয়। নৌকার প্রার্থী সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরীর সমর্থকরা ওই হামলা করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন হানিফ।

এরপর ১ ফেব্রুয়ারি ধর্মপুর ইউনিয়নের চাঁদেরপাড়া এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলিয়াস চৌধুরীর প্রচারণায় হামলা চালান নৌকার প্রার্থী নাছির উদ্দিন টিপু ও তার সমর্থকরা৷ এ হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক আনোয়ার হোসেন নিহত হন। আহত হন আটজন।

সবশেষ শুক্রবার রাতে সোনাকানিয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিম ও তার সমর্থকের বসতঘরে নৌকার প্রার্থী জসীম উদ্দিনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ ওঠে। এর আগে এদিন বিকেলে হাতিরপোল এলাকায়ও সেলিমের প্রচারণায় হামলায় পাঁচজন আহত হন।

এর মধ্যে ২৬ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে চরতি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী রুহুল্লা চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচন থেকে সরতে হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈনুদ্দিন চৌধুরী।

নির্বাচন নিয়ে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলীল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিছু ঘটনা ঘটলেও এখন পরিস্থিতি শান্ত-স্বাভাবিক রয়েছে। আশা করি শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে। আমাদের প্রস্তুতিও ভালো।’

নির্বাচনের সামগ্রিক অবস্থা জানতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব মণ্ডলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাড়া মেলেনি।

এ বিভাগের আরো খবর