বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পিলখানা হত্যাযজ্ঞ: খালাস ও সাজার মেয়াদ শেষেও কারাগারে ৪৬৮ জন

  •    
  • ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৭:৪৩

পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় মধ্যে হত্যা ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ঢাকার জজ আদালত ২০১৩ সালে দেয়া রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। এছাড়া ২৫৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়। আরও ২৭৮ জন বিডিআর সদস্যকে খালাস দেয়া হয়। তবে ১৩ বছরেও বিষ্ফোরক মামলা নিষ্পত্তিতে অগ্রগতি নেই। যে কারণে হত্যা মামলায় খালাস ও স্বল্প মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৪৬৮ বিডিআর সদস্য মুক্তি পাচ্ছেন না।

এক যুগেরও বেশি সময় আগে পিলখানা হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় খালাস পেয়েও ২৭৮ জন মুক্তি পাননি এখনও। নানা মেয়াদে দেয়া সাজা শেষ হয়ে গেছেরও আরও ১৯০ এখনও কারাগারে।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সে সময়ের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর সদরপ্তরের এক রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার ঘটনায় ৮৫০ জন বিডিআর সদস্যকে বিচারের ‍মুখোমুখি করা হয়।

এদের মধ্যে হত্যা ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ঢাকার জজ আদালত ২০১৩ সালে দেয়া রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। এছাড়া ২৫৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়। আরও ২৭৮ জন বিডিআর সদস্যকে খালাস দেয়া হয়।

তবে ১৩ বছরেও বিষ্ফোরক মামলা নিষ্পত্তিতে অগ্রগতি নেই। এখনও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়নি। যে কারণে হত্যা মামলায় খালাস ও স্বল্প মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৪৬৮ বিডিআর সদস্য মুক্তি পাচ্ছেন না।

রোববার পুরান ঢাকার জেলা জজ আদালত সংলগ্ন কোর্ট রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন এই বিডিআর সদস্যদের স্বজনরা।

এসব পরিবারের পক্ষে কারাবন্দি বিডিআর সদস্য মো. মুসার ভাই মো. ওয়ারেছ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিভাগীয় মামলা শেষ হয় ২০১১ সালে। এরপর হত্যা মামলাটি ৬৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুই বছর ১১ মাসের মধ্যে সকল আইনি কার্যক্রম শেষে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় প্রদান করা হয়। উক্ত মামলা উচ্চ আদালতে আপিল নিষ্পত্তি হয় ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর। যা বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে।

‘অথচ একইসঙ্গে হত্যা ও বিষ্ফোরক মামলার গেজেট হওয়া সত্বেও বিষ্ফোরক মামলাটি কোন এক অদৃশ্য কারণে আলাদা করা হয়, যা এখনো নিম্ন আদালতে বিচারাধীন। এই মামলায় প্রাথমিক অবস্থায় ২০১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিমাসে দুই দিন ধার্য তারিখ রাখা হলেও নামমাত্র এক ঘণ্টা কোর্ট চলে বলে ওই লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘আমরা অসহায় পরিবারগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। কারণ বিভিন্ন কারণে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা যেমন ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন, তেমনি আমরা আসামির পরিবারগুলো ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করি। একজন বন্দির সকল আইনি সুযোগ-সুবিধাসহ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু আমরা সকল আইনি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।’

হত্যা মামলায় খালাস বা সাজা শেষ হলেও বিষ্ফোরক মামলায় উচ্চ আদালতে জামিনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।

মো. ওয়ারেছ বলেন, ‘বিষ্ফোরক মামলায় দীর্ঘ ১৩ বছরেও আমাদের জামিন দেয়া হচ্ছে না। বারবার নিম্ন আদালতে জামিন চাইলে না দিয়ে উল্টো জামিন নাকচ করে তার কপি পর্যন্ত সরবরাহ করা হচ্ছে না। আমাদের উচ্চ আদালতে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ না করায় আমরা উচ্চ আদালতে যেতে পারছি না।’

তিনি বলেন, ‘একেকজন একটি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। অথচ একটি দুর্ঘটনায় সেই ব্যক্তিটি কারাগারে অবরুদ্ধ হওয়ার কারণে পরিবারগুলোর করুণ অসহায় অবস্থায় দীর্ঘ বছরকাল ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমনিভাবে শত শত পরিবার একদিকে নির্মম নিঃস্ব, সহায় সম্বলহীন দিনযাপন করছে, অন্যদিকে কারাগারে আটক প্রিয় স্বজনদের খরাচ, আইনজীবীদের খরচ, পরিবার পরিচালনা করা অতিশয় কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে।’

হত্যা মামলায় হাইকোর্টে আপিলের রায়ের কাগজপত্র কারাগারে পাঠানো হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা তাদের বার্ষিক রেয়াত থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেকের সাজা কমেছে এবং জরিমানা মওকুফ করা হয়েছে, কিন্তু তা জানতে পারছে না কারাগারে আটক থাকা আসামি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।’

কারাগারে এসব বিডিআর সদস্যরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কারান্তরীণ বিডিআরদের অনেকে বয়সের কারণে চলাচল করতে অক্ষম হয়ে নিদারুণ কষ্টে ধুকে ধুকে মৃত্যুবরণ করছেন। ইতিমধ্যে নানা রোগে কারাগারে ৪২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে কারাবন্দি বিডিআর সদস্যদের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ, বিডিআর সদস্য আব্দুর রশীদের ছেলে সাকিব আহম্মেদ, আব্দুস সালামের স্ত্রী আঞ্জুমানারা ও ছেলে অনিক, বিডিআর সদস্য রাখালের স্ত্রী রহিমা খাতুনও উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর