বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শোক-শ্রদ্ধায় সাংবাদিক পীর হাবিবকে শেষ বিদায়

  •    
  • ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৭:০৮

জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত জানাজা শেষে পীর হাবিবুর রহমানের সহকর্মী, বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীরা তাকে শেষ বিদায় জানান।

শোক, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শেষ বিদায় জানানো হলো বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমানকে। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠিত জানাজা শেষে তার সহকর্মী, বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীরা তাকে শেষ বিদায় জানান।

দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিটে জাতীয় প্রেস ক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা ও তার সহকর্মীরা অংশ নেন।

এর আগে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে তার মরদেহ জাতীয় প্রেস ক্লাবে আনা হয়। জানাজা শেষে তার মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানান তার সহকর্মীরা।

জানাজার আগে তাকে স্মরণ করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, ‘পীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য ছিলেন। তার বিদেহী আত্মার জন্য আমরা প্রার্থনা করি।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘পীর হাবিবুর রহমান সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। তিনি তার নীতি ও আদর্শে অটল ছিলেন। তার অগণিত পাঠক আছেন, যারা তার কলামের জন্য অপেক্ষা করতেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অতি আপনজন ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য পীর হাবিবকে চিরবিদায় জানাচ্ছি। এই বিদায় হয়তো আনুষ্ঠানিকতার। কিন্তু আমাদের মনে থাকবেন তিনি।’

পীর হাবিবুর রহমানের ছেলে অন্তর বলেন, ‘আমার পরিবারের সবার জন্য বাবা ছায়া হিসেবে ছিলেন। তিনি থাকলে মনে হতো সব হয়ে যাবে। আমি আমার ছায়াকে হারালাম। বাবা সব সময় মানুষের জন্য লিখেছেন। আপনারা দোয়া করবেন আল্লাহ যেন বাবাকে বেহেশত নসিব করেন।’

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা ও ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী। পীর হাবিবুর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের পক্ষে তার কলম সব সময় বলিষ্ঠ ছিল। চেতনাকে ধারণ করতে গিয়ে তিনি বহু প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন। হুমকির মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু কখনও কলমকে আত্মসমর্পণ করেননি। তার লেখনীর ভেতর অনেক আপনজনের বিরুদ্ধেও সুস্পষ্টভাবে সমালোচনা করতে কোনো দ্বিধা করেননি।’

সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, এডিটর্স গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, সাইফুল আলম প্রমুখ জানাজায় অংশ নেন।

জানাজা শেষে পীর হাবিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটি, এডিটর্স গিল্ড, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, দৈনিক দেশ রূপান্তর, সকালের সময়, ভারতীয় হাইকমিশনসহ বিভিন্ন সংগঠন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে জানাজা শেষে পীর হাবিবের মরদেহ নেয়া হয় রাজধানীর সেগুনবাগিচার ডিআরইউতে। সেখানে সহকর্মীদের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর আগে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওই জানাজায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুসহ সংগঠনের নেতারা।

জানাজা শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘পীর হাবিবুর রহমান ছিলেন সাংবাদিক জগতের একজন পথিকৃৎ। তিনি আমাদের ছেড়ে এত তাড়াতাড়ি না ফেরার দেশে চলে যাবেন আমরা ভাবতেও পারিনি।

‘গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের জন্য তিনি ছিলেন সত্যিকার অর্থেই একজন কলমযোদ্ধা। তিনিই গণমানুষের পক্ষে একজন ছিলেন, কিন্তু স্বপ্নের সন্ধানে ছিলেন। তিনি আমাদের মাঝে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘দুজন দুই অঙ্গনে কাজ করলেও তিনি আমার অত্যন্ত কাছের মানুষ ছিলেন। সব মিলে একটি বেদনাবিধুর দিন আজ পার করছি। পীর হাবিবুর রহমান এ দেশের জন্য, দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি তার ছিল গভীর শ্রদ্ধা। তার চিরবিদায়ের মধ্য দিয়ে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলো।’

এর আগে পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয়। সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এরপর পীর হাবিবুর রহমানকে নেয়া হবে বাংলাদেশ প্রতিদিনের কার্যালয়ে। সেখান থেকে তাকে নেয়া হবে গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। সেখানেই তার দাফন হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় স্ট্রোক করেন এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক। পরে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

গত বছরের অক্টোবরে মুম্বাই জাসলুক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনের মাধ্যমে ক্যানসারমুক্ত হন পীর হাবিব। গত ২২ জানুয়ারি তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহর পরামর্শে তিনি ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন।

করোনামুক্ত হলেও কিডনি জটিলতার কারণে পীর হাবিব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে স্ট্রোক করলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ল্যাবএইড হাসপাতালে শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর সুনামগঞ্জ শহরের হাসননগরে জন্ম হয় পীর হাবিবুর রহমানের।

এ বিভাগের আরো খবর