ই-কমার্স ব্যবসার সুষ্ঠু পরিচালনা ও অংশীজনদের জবাবদিহির আওতায় আনতে দেশের ১১ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে ডিজিটাল বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (ডিবিআইডি)।
রোববার ডিজিটাল কমার্স এবং ফেসবুকভিত্তিক ১১ প্রতিষ্ঠানকে ডিবিআইডি সনদ দেয়ার মাধ্যমে দেশে কার্যক্রমটি শুরু হয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের ডিবিআইডি নিবন্ধন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে রোববার আন্তমন্ত্রণালয় সভায় অংশীজনদের উপস্থিতিতে ডিবিআইডি নিবন্ধন উদ্বোধন করেন।
প্রথম দিনে ডিবিআইডির নিবন্ধন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে চালডাল লিমিটেড, ডায়াবেটিস স্টোর, রকমারি ডটকম, আজকের ডিল, সাজগোজ লিমিটেড, যাচাই ডটকম, ক্লোসেট, নওরিনস মিরর, আঁখি’স কালেকশন (ফেসবুক শপ), নিথান (ফেসবুক শপ ও আনন্দমেলা মার্চেন্ট) এবং মম ফানুস (ফেসবুক শপ ও আনন্দমেলা মার্চেন্ট)।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, ইক্যাবের তালিকাভুক্ত ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ হাজার ৬০৯টি। ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আড়াই হাজার। যার মধ্যে প্রথম হিসেবে এগুলোকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে।
এ কার্যক্রম সম্পন্ন করা গেলে ই-কমার্স ব্যবসায় প্রতারণা দূর হবে। ভোক্তারা সুরক্ষিত হবে, প্রতারণায় জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করা যাবে এবং বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে বলে জানান মন্ত্রী।
তার আগে সকালে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে দেশে ডিজিটাল কমার্স ব্যবসার সার্বিক পর্যালোচনা ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর অনলাইন রেজিস্ট্রেশন, অ্যাপস লঞ্চিং সংক্রান্ত আন্তমন্ত্রণালয়ের জরুরি সভা হয়।
সভা শেষে ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ই-কমার্সের সৃষ্ট সংকট দূর করতে তিন মাস আগে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আজ ডিবিআইডি চালুর মাধ্যমে তার একধাপ অগ্রগতি হলো। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘ই-কমার্স ব্যবসায় যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ চারটি পদক্ষেপ সরকারের চলমান রয়েছে। ডিবিআইডি তার একটি কার্যকর প্রথম পদক্ষেপ। এরপর আমরা এ খাতের অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য সেন্ট্রাল কমপ্লেন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সার্ভার চালু করব। ই-কমার্স খাতে কী পরিমাণ ট্রানজেকশন হয়, কারা কোথায় কী পরিমাণ পণ্য কেনাবেচা করে, তা পর্যবেক্ষণের জন্য সেন্ট্রাল লিকুইডিটি ট্র্যাকিং প্রোগ্রাম সিএলটিপি চালু করা হবে।’
তিনি জানান, এ ছাড়া যেগুলো ট্র্যাকিং করা সম্ভব নয়, তাদের বিষয়ে দেখভালের জন্য আরও একটি ইন্টার অপারেটর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হবে। চার কর্মসূচির কার্যকর পদক্ষেপে ই-কমার্স খাতকে বিতর্কমুক্ত এগিয়ে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ‘দেশে ফেসবুক, অনলাইনভিত্তিক অনেক ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করছে। তবে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রতারণার কারণে তার দায়ভার সব ই-কমার্স খাতে পড়ছে। ই-কমার্স খাতকে প্রতারণা থেকে দূরে রাখতে এবং এর ভবিষ্যৎ সুষ্ঠু পরিচালনার মাধ্যমে আরও প্রসারের লক্ষ্যে যে ডিবিআইডি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে, আশা করছি এতে ই-কমার্স তার সম্ভাবনা মেলে ধরতে সক্ষম হবে।’
অনুষ্ঠানে সিনিয়র বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ডিজিটাল কমার্স প্রধান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, ডাব্লিউসিএলের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান, উপসচিব মোহাম্মদ সাঈদ আলী, ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার ও সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদ আলম তমাল, সিনিয়র সহসভাপতি শাহাব উদ্দিন শিহাবসহ ডিবিআইডির নিবন্ধন পাওয়া ১১ প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।