বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শহীদ মিনারে সাংবাদিক পীর হাবিবকে শ্রদ্ধা-স্মরণ

  •    
  • ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৪:৩৫

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘তিনি (পীর হাবিবুর রহমান) অনেক বরেণ্য সাংবাদিক ছিলেন। সাংবাদিকতায় তিনি ছিলেন অকুতোভয়। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

মরদেহ রোববার বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন জন।

রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এ সাংবাদিককে শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় পার্টি, আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্রলীগ।

এ ছাড়া বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচ ৮৭, বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়।

শ্রদ্ধা জানানো শেষে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘তিনি অনেক বরেণ্য সাংবাদিক ছিলেন। সাংবাদিকতায় তিনি ছিলেন অকুতোভয়। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমি তার মৃত্যুতে যতটা না দুঃখ পেয়েছি, তার চেয়ে বেশি দুঃখিত হয়েছি সরকারের কার্যক্রমে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল বিএসএমএমইউতে তার চিকিৎসা হলো না। একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হতে হলো।

‘তিনি সব সময় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। মৃত্যুর সময় তিনি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ার দুঃখ নিয়ে গেছেন।’

জাফরুল্লাহ বলেন, ‘পীর হাবিবুর রহমানের সত্যবাদিতা আমাকে বিমোহিত করেছে। তার সাথে কথা হলে তিনি সব সময় স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি নিয়ে কথা বলতেন। তার মতো বীর, সাহসী কলমযোদ্ধাকে হারিয়ে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হলো, তবে আমাদের সবাইকে তার সাহসিকতা থেকে সাহস নিতে হবে।’

পীর হাবিবুরের পরিবারের পক্ষে তার ছেলে অন্তর বলেন, ‘বাবা সব সময় বলতেন আমার ভোগ-বিলাসিতার কোনো দরকার নেই। আমি মানুষের জন্য লেখালেখি করে যেতে চাই। ক্যানসারের সময়ও বাবা লেখা ছাড়েননি।’

তিনি বলেন, ‘বাবা সব সময় মাথা উঁচু করে বেঁচে যেতে চেয়েছিলেন। মাথা উঁচু করেই তিনি বেঁচে ছিলেন। আমার পুরো পরিবার মাথার ওপর থেকে ছায়া হারাল।

‘বাবা অনেক কিছু লিখতে, বলতে চেয়েছেন। হয়তো অনেক কিছু বলতে পারেননি। মানুষ চেয়েছে উনি বলুক, কিন্তু যেকোনো কারণে উনি এটি পারেননি। ওনার কষ্ট ছিল। আমি এটি জানি।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় বলেন, ‘জাতীয় পার্টি পীর হাবিবুর রহমানের কাছে অনেক ঋণী। উনি পল্লিবন্ধু এরশাদের অনেক ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বলতে গেলে তিনি তার উপদেষ্টাই ছিলেন। তাকে হারিয়ে আমরা একজন প্রকৃত বন্ধুকে হারালাম।’

পীর হাবিবুরের সহপাঠী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী শাহনাজ পারভীন বলেন, ‘তার চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের এবং দুঃখের। অল্প সময়ের মধ্যে সে সাংবাদিকতায় অনেক এগিয়ে গিয়েছিল। সে খুব বন্ধুবৎসল মানুষ ছিল। ওর বিদায়ে আমরা সবাই খুব কষ্ট পাচ্ছি।’

আরেক সহপাঠী তানভীর সিদ্দিকী বলেন, ‘সবাই তাকে সাংবাদিক হিসেবে চিনলেও আমরা তাকে বন্ধু হিসেবে জানি। আমাদের বন্ধুত্বের বয়স ২৫ বছরেরও বেশি। তার সাংবাদিকতার বাইরের যে জগৎ ছিল, সেটির সঙ্গে আমরা জড়িত ছিলাম।

‘ও খুব আড্ডাপ্রিয় ছিল। খুব আড্ডা দিতে পছন্দ করত। আমাদেরকে ও খুব মাতিয়ে রাখত। ও যখন অসুস্থ হয়েছে, তখন আমরা তার সুস্থতার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম; উদযাপনেরও প্রস্তুতি ছিল, কিন্তু সে সুযোগটা আর হলো না।’

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহ নেয়া হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবে। সেখানে জানাজা শেষে নেয়া হবে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে। সেখানেও জানাজা হবে পীর হাবিরের। এরপর তাকে নেয়া হবে বাংলাদেশ প্রতিদিনের কার্যালয়ে।

সেখান থেকে পীর হাবিবকে নেয়া হবে গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। সেখানেই তার দাফন হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় স্ট্রোক করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট পীর হাবিবুর রহমান। পরে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

গত বছরের অক্টোবরে মুম্বাই জাসলুক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনের মাধ্যমে ক্যানসারমুক্ত হন পীর হাবিব। গত ২২ জানুয়ারি তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহর পরামর্শে তিনি ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন।

করোনামুক্ত হলেও কিডনি জটিলতার কারণে পীর হাবিব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে স্ট্রোক করলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ল্যাবএইড হাসপাতালে শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর সুনামগঞ্জ শহরের হাসননগরে জন্মগ্রহণ করেন পীর হাবিবুর রহমান।

এ বিভাগের আরো খবর