আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেও শপথ নেয়ার আগেই মারা যাওয়া বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসানের প্রতি সম্মান জানিয়ে রোববার সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারকাজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রোববার এ ঘোষণা দেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেল, বিজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবীবৃন্দ এবং বিজ্ঞ আইনজীবীবৃন্দ আপনারা সবাই অবগত আছেন যে, আমাদের একজন কলিগ (সহকর্মী) এফ আর এম নাজমুল আহাসান গত শুক্রবার ইন্তেকাল করেছেন। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। তার আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের কার্যক্রম আজকের জন্য বন্ধ রাখা হলো।’
এর আগে আপিল বিভাগের কার্যক্রম শুরু হলে প্রথমেই অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, ‘মাই লর্ড আমাদের একজন সিটিং জাজ, বিচারপতি নাজমুল আহাসান সাহেব মারা গেছেন। এর আগেই দুজন সিটিং জাজ মারা গেছেন, তখন দুই দিনই কোর্ট হয়নি। একজন ফজলুর রহমান সাহেব, আরেকজন আমীর হোসেন সাহেব। তখন আদালত এক দিনের জন্য বন্ধ রেখেছিলেন। সেই ঐতিহ্য মেনে আমি আপনাদের কাছে প্রার্থনা করব যদি আজকে কোর্টটা বন্ধ রাখতেন। তিনি একজন সিটিং জাজ ছিলেন, তার ওপর আবার তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েও শপথ নিতে পারেননি। সব কিছু বিবেচনা করে যদি এটা করেন।’
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, মুনসুরুল হক চৌধুরী, ফিদা এম কামাল, আজমালুল হোসেন কিউসি, এ এফ এম আব্দুর রহমান, এস এম শাহজাহান, ফাওজিয়া করিম ফিরোজ, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও বার সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
সবাই আদালতের বিচারকাজ এক দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করতে ঐকমত্য পোষণ করেন। পরে প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকাজ রোববারের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সদ্য নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল সোয়া ৬টার দিকে মারা যান। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে তাকে গ্রামের বাড়ি বরিশাল নিয়ে দাফন করা হয়।
গত ৮ জানুয়ারি নাজমুল আহাসান আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি। ৯ জানুয়ারি আইন মন্ত্রণালয় থেকে গেজেট প্রকাশ করা হয়। সে দিনই বিকেলে তার শপথ নেয়ার কথা ছিল, তবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় শপথে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি।
এফ আর এম নাজমুল আহাসান ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল স্থায়ী হন।