ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর নানা আনুষ্ঠানিকতায় পুরান ঢাকায় উদযাপন হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা।
এ উৎসবে অগণিত ভক্ত বিদ্যা ও জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেছেন।
বাণী অর্চনার মধ্য দিয়ে শনিবার সকালে শুরু হয় পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে প্রতিটি মণ্ডপে দেবীর অর্চনা, পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। দেবীর সামনে অঞ্জলি দিয়ে ছোট শিশুদের বিদ্যাচর্চার হাতেখড়ি হয়।
পূজা উপলক্ষে বেলা বাড়ার সঙ্গে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবে পরিণত হয় শাঁখারি বাজারসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন মণ্ডপ। বর্ণিল সাজে সজ্জিত ছিল পুরান ঢাকা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। বিদ্যা-বুদ্ধির বিকাশের জন্য দর্শনার্থীরা দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন।
পুরান ঢাকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হয়েছে। যাদের পূজা আয়োজনের জায়গা সংকট ছিল, তারা রাস্তায় মণ্ডপ বসিয়ে আরাধনা করেন।
শুধু শাঁখারি বাজারেই ১৬টি মণ্ডপ বসানো হয়। এ ছাড়া তাঁতীবাজারে ১০টি ও বাংলাবাজারে ৮টি মণ্ডপ স্থাপন করা হয়। ঢাকা-ঢোল-কাঁসর আর শঙ্খধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরান ঢাকার বিভিন্ন মণ্ডপ।
সরস্বতী বিদ্যা ও ললিতকলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে পূজিত হয়। ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী ও শক্তির আঁধার হিসেবে দেবীর আরাধনা করা হয়।
পূজা নিয়ে আয়োজকদের একজন খোকন মল্লিক নিউজবাংলাকে বলেন, সরস্বতী পূজায় সব ধর্মাবলম্বী মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকে। ফলে এতে একটি অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ বিরাজ করে।
স্বপন ভট্টাচার্য নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কেউ কারও ধর্মে হস্তক্ষেপ না করার শিক্ষাই এ পূজার মাহাত্ম্য।
মণ্ডপের নিরাপত্তা নিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা হয়েছে। ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল বিভিন্ন এলাকায়।
প্রতিবারের মতো এবারও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজার আয়োজন হয়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থানের মানুষের ঢল নামে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।