বৈরী আবহাওয়ায় সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগরে অন্তত ৩২টি ট্রলার ডুবে গেছে। ট্রলারডুবির এসব ঘটনায় শতাধিক জীবিতসহ দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১৯ জেলে।
শনিবার সন্ধ্যায় দুবলার চরের দক্ষিণে ডুবোজাহাজ চর এলাকা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করেন অন্য জেলেরা। মারা যাওয়া জেলেরা হলেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কালিগঞ্জ গ্রামের মামুন শেখ ও পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার ধানখালী গ্রামের শেখ ইসমাইল হোসেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে বঙ্গোপসাগরের দুবলার চর থেকে ২৫ নটিক্যাল মাইল গভীর সাগরে ‘সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড’ ও সুন্দরবনের দুবলায় শুঁটকির জন্য মাছ আহরণে থাকা ট্রলারগুলো ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়।
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শতাধিক জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কোস্টগার্ড। তবে এখনও ১৯ জেলে নিখোঁজ থাকার তথ্যও দিয়েছেন তারা।
মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার লুৎফর রহমান জানান, ঝড়ের পর রাত থেকেই সম্মিলিতভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন কোস্টগার্ড, বন বিভাগ ও জেলেরা।
শনিবার দুপুর পর্যন্ত শতাধিক জেলেকে উদ্ধার করে এই দলটি। নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে তারা আবারও অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ট্রলারডুবির বিষয়ে বাংলাদেশ ফিশিং বোট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী জানান, ঝড়ের কবলে মোট ৩২টি ট্রলারডুবির খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১২টি বরগুনার। বাকি ২০টি বাগেরহাট ও পিরোজপুর এলাকার।
মোস্তফা আরও জানান, বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকাররত জেলেদের জালে এক জেলের মরদেহ উঠে এলে তা দেখে আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অন্য এক জেলে। তাকেও তীরে নিয়ে আসা হচ্ছে।
বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি ফিশারি ঘাটের আড়তদার মেসার্স ফাইভ ব্রাদার্স অ্যান্ড সন্সের মো. আব্দুল বারিক বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে আমাদের আড়তের তিনটি ট্রলার। এতে আমাদের ১১ জেলে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।’
বারিক জানান, নিখোঁজ এসব জেলের মধ্যে বাগেরহাটের কচুয়ার বগা গ্রামের আনিস সরদারের এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের সাত জেলে ছাড়াও একই গ্রামের ইলিয়াসের এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের এক জেলে রয়েছেন। বাকি নিখোঁজ তিনজন হলেন পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার তুষখালীর হারুন মুন্সির এফবি জামিলা ট্রলারের।
মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার লুৎফর রহমান জানান, রোববার ভোর থেকে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু করবে কোস্টগার্ড।