বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সরস্বতীর আগমনে ক্যাম্পাসে বসন্তের আমেজ

  •    
  • ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২১:২১

শাবির অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী সুষমা সরকার বলেন, ‘বিদ্যার আরাধনায় আমরা সরস্বতীর পূজা করছি। করোনা মহামারি কাটিয়ে ক্যাম্পাস যাতে আবার সচল হয় এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট কেটে যায় দেবীর কাছে এই প্রার্থনা করেছি।’

বসন্ত শুরুর এখনও দিন দশেক বাকি। মাঘের শেষ দিকে এসে শীত জেঁকে বসেছে। তবে এই ভরা শীতে শনিবার সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছিল বসন্তের আমেজ।

সপ্তাহখানেক আগেও যে ক্যাম্পাস ছিল স্লোগানে মুখর, আন্দোলনে উত্তাল সেই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) উৎসবের রং লেগেছে।

ক্যাম্পাসে শনিবার সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়, সরস্বতী পূজা ঘিরে স্থানে স্থানে গান বাজছে। আলোকসজ্জা করা হয়েছে চারপাশ।

তরুণীরা পরেছেন নানা রঙের শাড়ি আর তরুণরা পাঞ্জাবি। ক্যাম্পাসজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা। আড্ডা দিচ্ছেন। ছবি তুলছেন। গান গাইছেন। নাচও করছেন কেউ কেউ।

হিন্দু সম্প্রদায়ের বিদ্যার দেবী সরস্বতী। শিক্ষার্থীরাই মূলত শুভ্রবসনা এই দেবীর আরাধনা করে থাকেন। শাবি ক্যাম্পাসে অন্তত ১৫টি মণ্ডপে পূজিত হচ্ছেন দেবী।

শিক্ষার্থী তাসনুভা আক্তার বলেন, ‘পূজা যদিও হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা করছেন, তবে তাদের উৎসবে আমরাও শামিল হয়েছি। অনেক দিন পর ক্যাম্পাসে আনন্দের পরিবেশ বিরাজ করছে। আজ আমরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনের কোনো কর্মসূচি রাখিনি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী সুষমা সরকার বলেন, ‘বিদ্যার আরাধনায় আমরা সরস্বতীর পূজা করছি। করোনা মহামারি কাটিয়ে ক্যাম্পাস যাতে আবার সচল হয় এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট কেটে যায় দেবীর কাছে এই প্রার্থনা করেছি।’

লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বিজয় কুমার বলেন, ‘সরস্বতীর আরাধনার মাধ্যমে আমরা শিক্ষা, সংগীত ও শিল্পকলায় উৎকর্ষতা অর্জন করতে চাই। কেবল বইয়ের শিক্ষা নয়, প্রকৃত মানুষ হওয়ার শিক্ষার জন্য আমরা দেবীর আরাধনা করছি।’

উৎসবের আমেজ দেখা গেল সিলেট মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজে গিয়েও। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ঘটনার পর থেকেই বন্ধ থাকত সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এই কলেজের ফটক। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়েছিল। পরিচয়পত্র দেখিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতে হতো।

তবে সরস্বতী পূজার জন্য শিথিল করা হয় এই কড়াকড়ি। খুলে দেয়া হয় বন্ধ ফটক। কলেজে গিয়ে দেখা যায়, বন্ধ ক্যাম্পাসেও শিক্ষার্থীদের ভিড়। বাইরের অনেকেও এসেছেন পূজা দেখতে।

এমসি কলেজের পুকুরঘাট, অধ্যক্ষ বাংলো, জারুলতলা, বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ বিভিন্ন জায়গায় তরুণ-তরুণীদের ভিড়। রঙিন সাজে সজ্জিত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আড্ডা দিচ্ছেন তারা।

এখানকার পূজা কমিটির সদস্য ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সজল দাশ বলেন, ‘পূজার আনুষ্ঠানিকতা মূলত সকালেই শেষ হয়েছে। দুপুরে প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। বিকেলে মূলত ঘোরাঘুরি করছেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যার পর মণ্ডপে মণ্ডপে হয় আরতি। বাইরের অনেক দর্শনার্থী পূজা দেখতে ক্যাম্পাসে এসেছেন।’

স্ত্রীকে নিয়ে পূজা দেখতে এসেছেন এমসি কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী পরিন্দ্র বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘এই ক্যাম্পাসের সঙ্গে আমাদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এখন তো ক্যাম্পাসে আসাই হয় না। পূজা দেখতে আজ পরিবার নিয়ে এসেছি। স্মৃতির ক্যাম্পাসে আসতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।’

পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রাজতকান্তি গুপ্ত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিলেটে এবার দুই শতাধিক মণ্ডপে সরস্বতী পূজা হচ্ছে। রোববার সন্ধ্যায় সবগুলো প্রতিমা নিয়ে নগরে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী সবাইকে আলাদা শব্দযন্ত্র ব্যবহার না করা ও গান বাজানোর ক্ষেত্রে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর