বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তিস্তা ব্যারাজে চীনের অর্থায়নকে উড়ো খবর বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  •    
  • ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৫:২১

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আরেকটি প্রশ্ন আসছে, চীন আমাদের তিস্তা ব্যারাজের জন্য টাকা দিতে চায়। এই ব্যারাজ প্রকল্প ফ্রান্স যখন প্রথম বাংলাদেশে আসে ১৯৮৮ সালে, তখন বড় বন্যা হয়েছিল; সে সময় ফ্রেঞ্চ সরকার বাংলাদেশে বন্যা প্রতিরোধে একটি বড় প্রকল্প গ্রহণ করেছিল, প্রায় ৫-৬ বিলিয়ন ডলারের। অত টাকা কেউ দেয়নি।’

বন্যা নিয়ন্ত্রণে তিস্তা নদী ঘিরে যে উন্নয়ন পরিকল্পনা তাতে চীন সরকার অর্থায়ন করবে এমন কোনো কথা বাংলাদেশ সরকারকে দেশটি জানায়নি বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে শনিবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অসত্য তথ্য আন্তর্জাতিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আরেকটি প্রশ্ন আসছে, চীন আমাদের তিস্তা ব্যারাজের জন্য টাকা দিতে চায়। এই ব্যারাজ প্রকল্প ফ্রান্স যখন প্রথম বাংলাদেশে আসে ১৯৮৮ সালে, তখন বড় বন্যা হয়েছিল; সে সময় ফ্রেঞ্চ সরকার বাংলাদেশে বন্যা প্রতিরোধে একটি বড় প্রকল্প গ্রহণ করেছিল, প্রায় ৫-৬ বিলিয়ন ডলারের। অত টাকা কেউ দেয়নি।

‘এরই একটি অংশ ছিল তিস্তা ব্যারাজ। এখন চীনারা নাকি উৎসাহ দেখিয়েছে, আমাদের কিছু বলেনি যে, ওটা তারা করতে চায়।’

এরপরই একদল লোক দেশের বদনামে নেমে পড়ে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তখনই খেলো খেলো, সব খেলো, বাংলাদেশ চীন হয়ে গেল; এ ধরনের একটি ভয় তৈরি করা হচ্ছে। আমাদেরই অনেক জ্ঞান পাপী ইচ্ছা করেই এই ভয়টা তৈরি করছেন দুঃখজনকভাবে।’

বাংলাদেশে হওয়া গুমের বিভিন্ন ঘটনা জাতিসংঘ তদন্ত করবে বলে যে তথ্য এসেছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান তারা একটি লিস্ট দিয়েছিল, তারপর দেখা গেল অনেকেরই ভূমধ্যসাগরে সলিল সমাধি হয়েছে। এখানকার কোনো প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্যের ওপরেই তারা এ প্রতিবেদন করেছে। তাদের নিজেদের কোনো গবেষণা নেই। সেটি খুবই বায়সড প্রতিষ্ঠান, তার তথ্য মতে তারা এ কথা বলছেন।

‘তারা (জাতিসংঘ) কিছু নামও দিয়েছে, কিন্তু দু-একজন ছাড়া আমাদের লোক তাদের কাউকেই চেনে না। তথ্য নেয়ার জন্য সম্প্রতি পুলিশ সেসব পরিবারকে ফোন করেছে বা নিজেরাও কখনও কখনও গেছে। পুলিশের ধারণা, দিনের বেলা এরা থাকবে না তাই তারা রাতে যায়। এখন সে পরিবারগুলো অভিযোগ করেছে, তাদের হেরাজ করা হচ্ছে। পুলিশ জানতে চায়, যারা চলে গেছেন কবে, কোথায়, কীভাবে গেছেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই কিন্তু ফেরতও চলে আসে। এখন পুলিশ আর যায় না। আমরা বলেছি, তাদের একটি মিটিংয়ে ডাকেন, সেখানে সাংবাদিকরাও থাকবেন, তখন তারা বলবেন, কাকে-কখন নিয়ে গেছেন। ফেরত এসেছে কিনা।’

তিনি বলেন, ‘একটি-দুটি দুর্ঘটনা ঘটে, যেগুলোর খবর আমরা ঠিকমতো পাই না। আমরা অনেক দিন ধরে জানি আমাদের হারিছের বিষয়ে, তিনি গুম হয়ে গেছেন। এখন দেখি তিনি দেশেই ছিলেন, দেশেই নাকি মারা গেছেন, এটা ওনার মেয়ে বলেছেন। আমরা একসময় দেখলাম একজন নেতা দেশে নেই, তারপর দেখা গেল তিনি ভারতের একটি হোটেলে আছেন। এসব গুম-খুন বলা হয়, কতটুকু সত্য তা আমরা জানি না।

‘একটি লোক গুম হোক বা খুন হোক বিনা বিচারে এটি আমরা চাই না। আমরা চাই না জোর করে কাউকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রত্যেকের বিচার হোক। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী গ্রুপ এসব করে। পৃথিবীর সব দেশেই এটি কমবেশি হয়, আমাদের এখানে সবচেয়ে কম হয়।’

বাংলাদেশ ভূ-রাজনীতির স্বীকার বলে এমন ঘটনা ঘটছে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমাদের জিনিসগুলো, যেহেতু আমরা ভূ-রাজনৈতিকভাবে খুব ভালো একটি জায়গায় আছি, আমাদের আশপাশে বড় বড় দেশ। আমাদের সমুদ্রে অনেকেই এক্সেসেসের জন্য উদ্বিগ্ন, সে জন্য আমরা এখন সবার চক্ষুশুল।

‘আসল উদ্দেশ্য কিন্তু হিউম্যান রাইটস না; আসল উদ্দেশ্যে গুম-খুন না; আসল উদ্দেশ্য এগুলো নিয়ে চাপ দিয়ে কিছু ফায়দা সংগ্রহ করা। এগুলো অবশ্যই অপপ্রচার। আমাদের দেশের স্বার্থ অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।’

তিনি বলেন, ‘বাজারে একটি কথা উঠেছে, বাংলাদেশ নাকি চীনের লেজুড় হয়ে যাচ্ছে। কারণ তারা বলেন, বাংলাদেশ চীনের ডেবথ ট্র্যাপে পড়ে যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কার মতো। ডেবথ ট্র্যাপ হতে হলে ৪০ ভাগ ঋণ নিতে হবে। আমাদের সর্বমোট ঋণ হলো ১৬ শতাংশের মতো। এখনো অনেক দূর।

‘আর যদি প্রতিষ্ঠানগুলো দেখেন আমরা সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছি বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং আইএমএফ থেকে প্রায় ৭৩ শতাংশ প্লাস। আর পরে সবচেয়ে বেশি নিয়েছি জাপানের কাছ থেকে। আর চীন তো ধারেকাছেই নেই, মাত্র ৫ শতাংশ। কিন্তু আমাদের কিছু জ্ঞানপাপী বলে বেড়ান, সতর্ক হও। আমরা কোনো ডেবথ রিপেমেন্টে এক দিনও দেরি করি নাই, এই বদনাম আমাদের নেই।’

তিনি বলেন, ‘বলা হয় ৮০ ভাগ আমাদের সামরিক সরঞ্জাম নাকি চীন থেকে কিনছি। এটা ডাহা মিথ্যা, আমরা মিলিটারি জিনিস খুব একটা কিনি না, আমরা উন্নয়ন নিয়েই ব্যস্ত। যা কিনি সব দেশ থেকে কিনি।

‘ইউরোপ বলেন, ইংল্যান্ড বলেন আর আমেরিকা বলেন, সব দেশ থেকে কিনি। ভারতও আমাদের দিতে চাচ্ছে। তারা আমাদের কিছু লাইন অফ ক্রেডিট দিয়েছে কেনার জন্য। আমাদের সেনাবাহিনী জানে তারা কী কিনবে।’

এ বিভাগের আরো খবর