ফেসবুক লাইভে এসে রাঙ্গামাটির পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও বসতবাড়িতে হামলাসহ নানা অভিযোগ তোলায় উল্টো কারাগারে যেতে হলো যুব মহিলা লীগের কর্মী দাবি করা এক নারীকে।
সম্প্রতি তিনি ফেসবুক লাইভে এসে বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
পরে এ ঘটনার জেরে ২৯ জানুয়ারি ওই নারীসহ সাবেক মেয়র হাবিবুর রহমানের পুত্র সাইফুর রহমানকে আসামি করে রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী।
মেয়রের মামলার পর বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আসামি নারীকে রাঙ্গামাটিতে পাঠালে আদালত কারাগারে পাঠায়।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তাপস রঞ্জন ঘোষ।
অন্যদিকে গ্রেপ্তারের আগে ওই নারী ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানায় মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে পুলিশ সেটি নেয়নি। শুধু তা-ই নয়, একটি জিডি করেও তার কোনো তদন্ত হয়নি।’
তবে ওই নারীর মামলা করতে চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রাঙ্গামাটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই নারী মেয়রের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে কখনও আসেননি। এসব কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবে মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী তার বিরুদ্ধে কয়েক দিন আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন।’
গ্রেপ্তারের আগে ফেসবুক লাইভে ওই নারী বলেন, ‘দীর্ঘ চার বছর ধরে মেয়র আকবরের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। মেয়র বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বলে সে কখনও বিয়ে করবে না। যদি বিয়ে করে তাহলে আমাকে করবে। তবে সে কথা রাখেনি। পরে মেয়রের বিয়ের তিন দিন পরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম, যা রাঙ্গামাটিবাসী জানে।
তিনি বলেন, ‘পুরো ১৮ দিন মেডিক্যালে ছিলাম। এখনও মেয়র তা স্বীকার করে না।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাঙ্গামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘তার এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’
আকবর বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনলাইনে অপপ্রচারের কারণে তাকে প্রধান আসামি করে সাবেক মেয়র হাবিবুর রহমানের পুত্র সাইফুর রহমানসহ বিভিন্ন অনলাইনকে যুক্ত করে ২৯ জানুয়ারি মামলা করেছি।’
এদিকে শুক্রবার বিকেলে রাঙ্গামাটি যুব মহিলা লীগের সভাপতি রোকেয়া আক্তার এবং সাবেক নারী এমপি ও রাঙ্গামাটি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজা বেগম চিনুসহ দুই দলের যৌথ স্বাক্ষরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। সেখানে মেয়রের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলা ওই নারীকে রাঙামাটিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
এতে দাবি করা হয়, মেয়রের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলা নারী কখনই যুব মহিলা লীগের কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মী ছিলেন না।