যুক্তরাষ্ট্রের চারজন প্রভাবশালী রাজনীতিককে যে ভাষায় চিঠি দেয়া হয়েছে, তাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সে দেশের রাজনীতিক কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ।
বলেছেন, বাংলাদেশের সহায়তা বন্ধের অনুরোধ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন তদন্ত করতে ফখরুলের এই চিঠি ‘দেশের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ অপরাধ’।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুলের লেখা পড়ে মনে হচ্ছে তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে, বিশেষভাবে বাংলাদেশে মার্কিন স্বার্থ নিয়েই বেশি চিন্তিতl তিনি কি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ? তার কাছে কি বাংলাদেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বের কোনো মূল্য নেই?’
২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল, অপরটি ২৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের চারজন কংগ্রেসম্যান ও সিনেটরকে মির্জা ফখরুল চারটি চিঠি দেন।
সম্প্রতি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এই চারটি চিঠি প্রকাশ করেন। এতে দেখা যায়, দুটি চিঠিতে তিনি বাংলাদেশকে দেয়া সহায়তা পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করছেন। দুটি চিঠিতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি দাবি করে এর তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
একটি চিঠিতে বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের যুক্তি তুলে ধরে ফখরুল লেখেন, ‘এটা জরুরি যে কংগ্রেসনাল অ্যাপ্রোপ্রিয়েটররা সতর্কতার সঙ্গে ও কৌশলীভাবে এ পন্থা ব্যবহার করে আমেরিকার অত্যাবশ্যক জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের ক্ষেত্রে এমনভাবে সুরক্ষিত করবেন, যা বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষের কঠোর নেতৃত্বের অধীনে ক্রমাগত খারাপ হতে থাকা পরিস্থিতির উন্নতিতে অবদান রাখে।’
সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি ও তার সহযোগীরা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অৰ্থনীতি এবং এ দেশের কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য জলাঞ্জলি দিয়ে শুধু নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চাইছেl তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিতেও কুণ্ঠিত নয়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ চেয়ে তিনি (ফখরুল) যে অপরাধ করেছেন, সেটি আমাদের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ক (১) (খ)-এর বিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ অপরাধl একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এর চেয়ে বড় অপরাধ আর হতে পারে না।‘
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির ভার্চুয়াল সভায় বক্তারা
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘বিএনপি এবং তার সহযোগী কিছু ব্যক্তি কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্তl সাম্প্রতিককালে এই ষড়যন্ত্র প্রকাশিত হওয়ায় বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সরকার ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেl সরকারের শক্তিশালী তৎপরতায় ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটতে শুরু করেছেl’
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে, ষড়যন্ত্র তখনই সফল হয়, যখন ষড়যন্ত্রের কথা গোপন থাকেl যেই ষড়যন্ত্র প্রকাশিত হয়ে যায়, সেটি ব্যর্থ হয়l’
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের ভেতরে এবং বহির্বিশ্বে শেখ হাসিনার শক্তিমত্তা ও গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো ধারণা নেই বলে তারা ষড়যন্ত্রে এত সময় ব্যয় করছেl ইতিহাস কখনও ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমা করে নাl’
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য জাকিয়া পারভীন খানম, অসীম সরকার, সৌমিত্র সর্দার, আমেনা কোহিনুর, সৈয়দ আবু তোহা, শামসুর রহমান, ওমর ফারুক আসিফ, সাজ্জাদ হোসেন চিশতী, সাঈদ খান শাওন, নুরুল ইসলাম মজুমদার, আরিফ সোহেল, দিলরুবা ইয়াসমিন, রায়হান কবির, শবনম জাহান, জামান সিকদার, মোয়াজ্জেম হোসেন কাওসার, ফাহিম শাহরিয়ারও এ সময় বক্তব্য রাখেন।