ছোট ভাইয়ের হত্যা মামলার সাক্ষী দিতে গিয়ে ২০০২ সালের মার্চে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আদালত চত্বরে খুন হন ব্যবসায়ী জানে আলম। হত্যাকাণ্ডের পরপরই আত্মগোপনে চলে যান এ মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. জসিম উদ্দিন। এরপর ছদ্মবেশে ট্রাক চালাতে থাকেন। এভাবে পালিয়ে বেড়ান প্রায় ২০ বছর।
অবশেষ ধরা পড়েছেন র্যাবের হাতে। মহানগরীর নিমতলা ট্রাক স্ট্যান্ড থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জসিম উদ্দিনকে আটক করে র্যাব-৭।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ২০০১ সালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মাহমুদুল হক নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মামলার সাক্ষী দিতে যাওয়ায় ২০০২ সালের ৩০ মার্চ সকালে লোহাগাড়ায় আদালত চত্বরে মাহমুদুলের বড় ভাই ব্যবসায়ী জানে আলমকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে তজবিরুল আলম লোহাগাড়া থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
২০০৭ সালের ২৪ জুলাই বিচারিক আদালত মামলার রায় ঘোষণা করে। রায়ে সৈয়দ আহমেদসহ ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। আটজনকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন। এ রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডপ্রাপ্তরা আপিল করলে সৈয়দ আহমেদসহ ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড, দুজনকে যাবজ্জীবন ও বাকিদের খালাস দেয়া হয়।
চার মাস আগে মাহমুদুল হত্যা মামলায়ও তালিকাভুক্ত আসামি ছিলেন জসিম।
র্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবছার বলেন, ‘হত্যার ঘটনার পর আসামি জসিম ছদ্মবেশে ট্রাক চালাতেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহানগরীর নিমতলা ট্রাক স্ট্যান্ড থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুটি খুনের সঙ্গেই জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে জসিম। মূলত ছোট ভাইয়ের হত্যা মামলা চালানোর কারণেই বড় ভাই জানে আলমকে হত্যা করা হয়। তাছাড়া জানে আলম ছোট ভাই খুনের প্রত্যক্ষদর্শীও ছিলেন।’
পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জসিমকে লোহাগড়া থানায় হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
এর আগে ২৭ জানুয়ারি রাতে জানে আলম হত্যায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আরেক আসামি সৈয়দ আহমেদকে আটক করেছিল র্যাব।
কখনও উদ্বাস্তু, কখনও বাবুর্চি, কখনো বা নিরাপত্তাকর্মীর ছদ্মবেশে প্রায় ২০ বছর পালিয়ে বেড়ান তিনিও।