মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা মুক্তিযুদ্ধকালে ছাত্র ইউনিয়ন করতেন বলে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী যে দাবি করেছেন, তা অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করে ছাত্র ইউনিয়ন।
জাফরুল্লাহর বক্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘ইতিহাস বিকৃতি’ বলেও দাবি করেছে সংগঠনটি।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজউল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল স্বাক্ষরিত বৃহস্পতিবারের যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) প্রতিবাদ সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচার সঠিক হয়নি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে বিচারকদের দায় বেশি।
কাদের মোল্লা মুক্তিযুদ্ধের সময় ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী ছিলেন দাবি করে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘এখনও মতিয়া চৌধুরী, নাহিদ (নুরুল ইসলাম নাহিদ) বেঁচে আছেন। তাদেরকে সাক্ষী হিসেবে চেয়েছিলেন, কিন্তু বিচারক তাদেরকে ডাকেননি।
‘বঙ্গবন্ধুর সময়ে তিনি (আব্দুল কাদের) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের সদস্য ছিলেন। এ রকম একজন ব্যক্তিকে বিচার না করে শুধু জোয়ারের পানিতে নৌকা ভাসিয়ে ফাঁসি দেয়া ঠিক হয়নি।’
জাফরুল্লাহর উল্লিখিত বক্তব্যকে ভিত্তিহীন দাবি করে ছাত্র ইউনিয়ন বলছে, ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীর সঙ্গে ছাত্র ইউনিয়নকে জুড়ে দেয়া এ বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়নের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ও পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে হওয়া আন্দোলনে ছাত্র ইউনিয়নের অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টিরই অপপ্রয়াস।
মুক্তিযুদ্ধে কাদের মোল্লার ছাত্র ইউনিয়ন করার তথ্যটি অসত্য দাবি করে সংগঠনের নেতারা বলেন, ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন কাদের মোল্লা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে তিনি শহীদুল্লাহ হলে থাকতেন এবং ১৯৭০ সালের অক্টোবরে তিনি শহীদুল্লাহ হল ছাত্র সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন।
মুক্তিযুদ্ধে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করে ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে জাতির সামনে মিথ্যাচার করছেন। তা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
কাদের মোল্লা ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচার নিয়ে জাফরুল্লাহর বক্তব্যেরও নিন্দা জানায় ছাত্র ইউনিয়ন।
সংগঠনটি মনে করে, মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের জঘন্যতম অপরাধকে লঘুভাবে তুলে ধরতেই জাফরুল্লাহ এমন মন্তব্য করেছেন।