চাঁদপুরে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে বিক্রি করা সেই সন্তানকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
ইউএনও গাজী মো. শরিফুল হাসান বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে আট দিন বয়সী শিশুটিকে তার মায়ের হাতে তুলে দেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরে আমরা বিভিন্ন জায়গায় শিশুটির খোঁজ করি। ষাটনল এলাকার এক প্রবাসীর স্ত্রী সিমলা আক্তার শিশুটিকে লালনপালনের জন্য কিনেছেন বলে জানতে পারি। ওই নারীর তিনটি মেয়েসন্তান আছে।
‘আমরা উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছি। ওই পরিবার মানবিক দিক বিবেচনায় কোনো টাকা দাবি করেনি।’
ইউএনও আরও বলেন, ‘শিশুটির মা ও নানি আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন তারা হতদরিদ্র হওয়ায় ৫০ হাজার টাকায় স্বেচ্ছায় ওই নারীর কাছে তাকে বিক্রি করেছিলেন। নবজাতককে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত। আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে শিশুটির মাকে পাঁচ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে।’
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার বারোআনি গ্রামের তামান্না বেগম গত ২৬ জানুয়ারি উপজেলার পালস-এইড জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারের মাধ্যমে ছেলেসন্তানের জন্ম দেন।
অপারেশন, ওষুধপত্র এবং আনুষঙ্গিক খরচসহ হাসপাতালের ৪০ হাজার টাকা বিল দিতে না পেরে তিনি ৫০ হাজার টাকায় নিজের সন্তানকেই বিক্রি করে দেন। হাসপাতালে ভর্তির আগে স্বামী মোবাইল ফোন বন্ধ করে বাড়ি থেকে চলে গেলেও ফিরে এসে সন্তানকে ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ দিতে থাকেন।
সন্তানকে ফিরে পেতে বিত্তবান মানুষের সহায়তা চান তামান্না। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
সন্তান ফিরে পেয়ে তামান্না বলেন, ‘হাসপাতালের বিল দিতে না পেরে বাধ্য হয়ে নিজের সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছিলাম। অবশেষে সন্তান ফিরে পেয়ে আমি অত্যন্ত খুশি। প্রশাসন ও ওই পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’