গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে বা সমঝোতা করে অংশ নিলেও জাতীয় পার্টি এখন আর জোট নিয়ে ভাবছে না বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। বরং তারা এককভাবে সব আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার কথা ভাবছে।
পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে ফেনী জেলার নেতাদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় বৃহস্পতিবার দলের মহাসচিব এ কথা জানান।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় চুন্নু বলেন, ‘জাতীয় পার্টি কোনো জোট নিয়ে ভাবছে না। আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত করার কাজ করছে দল।’
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে ভোটে অংশ নেয় জাতীয় পার্টি। ২০১৪ সালে বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের মুখে জাতীয় পার্টির ভোটে অংশ নেয়া নিয়ে নানা ঘটনা ঘটে। দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নানা নাকটীয়তার পর ভোট বর্জনের কথা বললেও কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদের অনুসারীরা ভোটে যায়। তবে বেশ কিছু আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ। ভোট শেষে ৫ বছর প্রধান বিরোধী দল হয় জাতীয় পার্টি।
২০১৮ সালে বিএনপি ও সমমনারা ভোটে অংশ নিলে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি আবার জোটবদ্ধ নির্বাচন করে। ভোট শেষে আবার মহাজোট ভেঙে যায় এবং জাতীয় পার্টি এখন জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল।
আগামী নির্বাচনের আগে দলকে আরও শক্তিশালী করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান জাপা মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করবে। দেশের মানুষ মাটির নিচ দিয়ে রেললাইন আর আসমান দিয়ে সড়ক পথ দেখতে চায় না। দেশের মানুষ চায় প্রতিটি জেলা ও উপজেলা শহরে বিশেষায়িত হাসপাতাল; যেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবে সাধারণ মানুষ।’
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে চুন্নু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কর্মীরা এমনভাবে লুটপাট করছে যাতে আগামী ২০-৩০ বছরে তাদের আর অভাব হবে না। আওয়ামী লীগ কর্মীরা লুটতরাজ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছে না। আর বিএনপিও লুটতরাজ করে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
‘বিএনপি শুধু মুক্তি চাই, মুক্তি চাই বলে চিৎকার করছে। কিন্তু দেশের মানুষের দুর্দশার কথা এই দুটি দল ভাবছে না। সংসার চালাতে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। মানুষের কাজ নেই, ঘরে ঘরে কয়েক কোটি বেকার দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।’
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব (চট্টগ্রাম বিভাগ) রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব বেলাল হোসেন, ফেনী জেলা আহ্বায়ক রাশেদ চৌধুরী।