মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মাহিরুল। ১৩ বছর আগে ২০০৯ সালে গাড়াবাড়িয়া বাজারে স্বর্ণালী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি।
কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণ দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে আস্থা অর্জন করেন এলাকাবাসীর। একসময় বিত্তবানদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন মাহিরুল। তা দেখে নিম্ন আয়ের মানুষও তাদের আমানত রাখতে শুরু করেন।
শুরুতে ১ লাখ টাকায় মাসে ১৬০০ টাকা মুনাফা দেয়া শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এতে আকৃষ্ট হতে থাকেন গ্রাহকেরা।
বৃহস্পতিবার কার্যালয়ের সামনে আমানতকারীদের ভিড় দেখা যায়। কিন্তু কার্যালয় তালাবদ্ধ।
প্রতিষ্ঠান বন্ধ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন ৬০ বছরের আমেনা খাতুন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ স্বামী মরে যাওয়ার পরে তিল তিল করে কষ্টে জমানো টাকা এই জায়গায় জমা রাখছিলাম। আমার সেই সব টাকা নিয়ে ওরা পালিছে। এখন আমি কী করব?’
রোজিনা খাতুন নামের আরেকজন বলেন, দুই-এক হাজার টাকা কইরি জমিয়ে এক লাখ টাকা হইয়িছিল। আমি জমি কিনব বুইলি রাখছিলাম। এই অফিসের লোকজন গি বলল আমাদের কাছে টাকা রাখেন বিটি, আমি তাই বইলি টাকা রাখছিলাম। আজ তাদের টাকা দেয়ার কথা ছিল। এখন দেখছি অফিসে তালা।’
আরেক গ্রাহক আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘আমার গ্রামের জামাই মাহিরুল এই অফিস দিছিল। প্রায় দশ বছর ধইরি হবে এই গ্রামে অফিসটা হইছে। আমার মতো তিন শ জনের কাছে প্রায় ৮ কোটি টাকা নিয়ে তারা পালিইয়ে গিছে। আমার এই জায়গাতে গরু বেচা সাত লক্ষ টাকা ছিল।’
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মৌসুমি খানম মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সমবায় থেকে অনুমোদনের বাইরে গিয়ে অনৈতিকভাবে ঐ এলাকার কয়েক শ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আমানত গ্রহণ করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। বেশ কিছু গ্রাহককে টাকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু গ্রাহকরা গিয়ে জানতে পারেন অফিসে তালা মেরে পালিয়েছেন সমিতির লোকজন।
লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ইউএনও মৌসুমি।