বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ডিআইজি মিজান চাপের মুখে ঘুষ দিয়েছিলেন’

  •    
  • ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৩:৫২

ডিআইজি মিজানের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন, ফোন রেকর্ড ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য থেকে এটা প্রমাণিত যে ডিআইজি মিজান বাধ্য হয়ে দুদক কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন। তাই চাপের মুখে বাধ্য হয়ে ঘুষ দেয়াটা অপরাধের মধ্যে পড়ে না।’

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচার আইনের মামলায় পুলিশের বরখাস্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে এই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী।

ডিআইজি মিজানের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী শুনানি করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন, ফোন রেকর্ড ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য থেকে এটা প্রমাণিত যে ডিআইজি মিজান বাধ্য হয়ে দুদক কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন। তাই চাপের মুখে বাধ্য হয়ে ঘুষ দেয়াটা অপরাধের মধ্যে পড়ে না। তাছাড়া এই ৪০ লাখ টাকার বৈধতা সম্পর্কেও কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়নি। তাই তিনি এই অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়ার যোগ্য। আমরা বিজ্ঞ আদালতের কাছে ন্যায়বিচারের প্রার্থনা করছি।’

এরপর দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের পক্ষে অপর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন মর্মে সময় আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি বাছিরের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য তারিখ ঠিক করেছে।

গত ২৪ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তিনি আইন অনুযায়ী আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।

শুনানিকালে ডিআইজি মিজান এবং এনামুল বাছিরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

গত ২৩ ডিসেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১৭ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে আদালত।

এরপর গত ৩ জানুয়ারি আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন মিজানুর রহমান এবং এনামুল বাছির। ওইদিন তারা লিখিত বক্তব্য জমা দেবেন বলে আদালতকে জানান। এ জন্য তারা সময়ও চান। আদালত ১২ জানুয়ারি আসামিদের লিখিত বক্তব্য জমা দেয়ার তারিখ ঠিক করেন। ওই দিন ডিআইজি মিজান ৬ পৃষ্ঠা এবং এনামুল বাছির ১২ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য আদালতে জমা দেন।

৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন শেখ মো. ফানাফিল্লাহ।

গত বছর ৯ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। এরপর তিনি মামলাটি বিশেষ জজ আদালত-৪-এ বদলির আদেশ দেন। গত বছর ১৮ মার্চ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।

২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। ঘুষ লেনদেনসংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজানও এ বিষয়ে নিজেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।

এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সংস্থার সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।

এরপর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের দলনেতা শেখ মো. ফানাফিল্যা মানি লন্ডারিং আইনে সংস্থার ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন। একই বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে।

অন্য দিকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার ডিআইজি মিজানকে এই মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এ বিভাগের আরো খবর