‘স্বপ্ন’ সুপারশপে ‘রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট’ পদে চাকরি পেয়েছেন ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চেয়ে পোস্টার সাঁটানো আলমগীর কবির।
বুধবার সন্ধ্যায় বগুড়ায় আলমগীরের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন স্বপ্ন সুপারশপের পরিচালক সামসুদ্দোহা শিমুল।
তিনি স্বপ্নে চাকরি পাচ্ছেন, সেটি আগেই জানা গিয়েছিল। তবে কোন পদে যোগ দিচ্ছেন, সে বিষয়টি জানা গেল তার যোগদানের পরই।
দুপুর ১২টার দিকে আলমগীর কবির বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান। সেখানে আলমগীরের সঙ্গে প্রায় ২ ঘণ্টা কথা বলেন এসপি সুদীপ কুমার।
পরে সন্ধ্যার দিকে পুলিশ প্লাজা শপিং মলের ‘স্বপ্নের’ বগুড়া শাখায় রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট পদে তাকে চাকরির ব্যবস্থা করেন এসপি।
দুপুরে তিনি বলেন, ‘আলমগীরের ওই বিজ্ঞাপনের সত্যতা যাচাই করার জন্য তার সাক্ষাৎকার নিই। কথা বলে মনে হয়েছে তার চাকরি আসলেই প্রয়োজন আছে।
‘আবার এটাও ঠিক, ওই ধরনের বিজ্ঞাপন দেয়া হীন মানসিকতার পরিচয়। সে কথা তাকে বলেছি।‘
৩২ বছর বয়সী আলমগীর কবির বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। তিনি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার শরাইল গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে। বগুড়া শহরের জহুরুলনগর একতলা মসজিদ এলাকার পাশের একটি বাড়িতে থাকেন।
আর্থিক অনটনের কারণে আলমগীর কবিরের তিন বেলা ঠিকমতো খাওয়া হচ্ছিল না। এই কারণে উপায় না দেখে সম্প্রতি তিনি আশ্রয় নেন বিজ্ঞাপনের। দেয়ালে সাঁটানো বিজ্ঞাপনে তিনি জানান, ‘শুধু দু-বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই।’
দেয়ালে দেয়ালে লাগানো সেই বিজ্ঞাপনের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন এক ব্যক্তি। এর পর থেকে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় পোস্টটি। এতে আলমগীর নিজেই বিব্রত অবস্থায় পড়েন।
তিনি জানান, ফেসবুকে ওই পোস্ট তিনি করেননি। অন্য কেউ করেছেন।
আলমগীরকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন হলে তাকে খুঁজতে থাকে পুলিশ। মঙ্গলবার বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, তার কোনো সাহায্যের প্রয়োজন কি না তা নিশ্চিত হতেই খোঁজ চলছে।
এ বিষয়ে আলমগীরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশ আমার খোঁজ করে থাকলে আমি তাদের সঙ্গে নিজে যোগাযোগ করব।’
বিকেলে যখন চাকরি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়, সে সময় এক প্রতিক্রিয়ায় আলমগীর বলেন, ‘এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না। আগে দেখি আমার যোগ্যতা অনুযায়ী আমি কেমন পদ পাই।’