ফরিদপুরে নবজাতকের কপাল কাটার ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে মামলা হয়েছে।
বুধবার বেলা ২টার দিকে মামলা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দুলাল চন্দ্র সরকার।
তিনি বলেন, ‘যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের একটি মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ১/২০২২। আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। ৩ মার্চ আসামিদের আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।’
নবজাতকের বাবা মো. শফি খান বলেন, ‘মামলায় ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই ফরিদপুরের আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত।’
আসামিরা হলেন হাসপাতালের মালিক তিন ভাই মো. জাকারিয়া মোল্লা পলাশ, মো. আল হেলাল মোল্লা টগর, মো. গোলাম কিবরিয়া রাসেল, তাদের মা চেয়ারম্যান রহিমা রহমান, হাসপাতালটির আয়া চায়না আক্তার ও দালাল মো. আরিফুজ্জামান সবুজ।
এ ছাড়া সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসককে মোকাবিলা বিবাদী করা হয়েছে।
শফি খান আরও বলেন, ‘আমার প্রথম বাচ্চা নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। যে স্বপ্নটা ওরা নষ্ট করে দিয়েছে। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী মানিক মজুমদার বলেন, ‘আল-মদিনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার মক্কেলের ক্ষতি করেছে। কারণ হাসপাতালটিতে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে তাদের সেখানে নেয়া হয়েছে। তবে সেখানে কোনো প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স কিংবা আয়া ছিল না। আমার মক্কেল ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলাটি করেছেন। তারা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন।’
ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এ হাসপাতালটি স্থাপিত হয় ২০০৭ সালে। ২০১৫ সাল থেকে এ হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি।
১৫ জানুয়ারি সকালে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দক্ষিণ ময়েজউদ্দিন মণ্ডলপাড়া গ্রামের শফিক খানের স্ত্রী রুপা বেগমকে সন্তান প্রসবের জন্য ওই হাসপাতালে নেয়া হয়। সন্তান প্রসবকালে ওই হাসপাতালের নার্স দাবি করা আয়া চায়না বেগম সিজার করলে নবজাতকের কপালের বাম ভ্রুর ওপর কিছু অংশ কেটে যায়। পরে নয়টি সেলাই দেয়া হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিনই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়।
শিশুর বাবা ঘটনার পরদিন শফিক খান কোতোয়ালি থানায় হাসপাতালের চেয়ারম্যান রাহিমা রহমান, তার দুই ছেলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জাকারিয়া রহমান মোল্লা পলাশ ও আল হেলাল মোল্লা টগর এবং নার্স চায়না বেগমকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।