চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ডায়ালাইসিস সেবা আবারও বন্ধ রয়েছে। এতে ডায়ালাইসিস করতে আসা রোগীরা পড়েছেন বিপাকে।
বুধবার সকাল থেকে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ রয়েছে। এর আগে জানুয়ারি মাসেও এক দিন বন্ধ থাকে এ ডায়ালাইসিস সেবা।
সরকারের সঙ্গে পিপির আওতায় স্যান্ডোর ডায়ালাইসিস সার্ভিস নামে ভারতীয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ সেবা দিয়ে থাকে।
হাসপাতালের স্যান্ডোরের ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ হিমেল আচার্য্য নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ডায়ালাইসিসের জন্য যেসব মেডিসিন (রি-এজেন্ট) প্রয়োজন তা শেষ হয়ে যাওয়ায় আমাদের পক্ষে রোগীদের সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম দুটি ইউনিটে ২৩ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। ফলে নতুন করে ওষুধ কেনারও টাকা নেই। আমরা গত দুই দিন আগে লিখিতভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রোগীদের বিষয়টি জানিয়েছি।’
প্রতিদিন ১০০ রোগী ডায়ালাইসিস সেবা নিতে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে আসেন। একজন রোগীকে প্রতি সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস করতে হয়। সরকারি ভতুর্কিতে একজন রোগীর প্রতি ডায়ালাইসিস করতে খরচ হয় ৫১০ টাকা। মাসে একজন রোগীকে ৮ বার এ সেবা নিতে হয়।
ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ হওয়ায় বিপকে পড়েছেন রোগীরা।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বুধবার সকাল থেকেই সেবা না পেয়ে রোগীরা হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটের সামনে অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ ক্ষোভ জানিয়েছেন।
পটিয়া থেকে সকাল ৮টায় ডায়ালাইসিস করতে আসেন ৪৫ বছরের নাসিমা আক্তার। ডায়ালাইসিস করতে না পেরে দুপুর ১২টায় বাড়ি ফিরে যান। সেবা চালু হতে পারে এ ভরসায় বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আবার আসেন।
এ সময় তার ছেলে আসহাব উদ্দিন নাবিল ক্ষোভ জানিয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার মা বসতে পারেন না। সকালে ৩ ঘণ্টা অপেক্ষার পর মায়ের কষ্ট দেখে বাড়ি ফিরে যাই। এখন শুনেছি আবার চালু হবে। তাই এসেছি। রীতিমতো ভোগান্তির শিকার হলাম।’
চট্টগ্রামের দামপাড়া থেকে আসা আবদুল আউয়াল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বছর থেকে এখানে সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাইসিস করতে আসি। ডাক্তাররা বলে দিয়েছেন আমার কিডনি রোগের একমাত্র চিকিৎসা নিয়মিত ডায়ালাইসিস করানো। এখন সকাল থেকে আশায় আছি কখন চালু হবে সেবা।’
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা মূলত ভারতীয় স্যান্ডর মেডিকেইটস লিমিটেডের অধীনে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় চলত। সরকার এটা ভর্তুকি দিয়ে চালাত। কিন্তু আজ হঠাৎ করে আমাদের কিছু না জানিয়ে ওরা এটা বন্ধ করে দিল।’
‘তারা আমাদের জানিয়েছে বিল নিয়ে নাকি ঝামেলা হয়েছে, ওরা ঢাকায় জানিয়েছে। আগামীকালের মধ্যেই এটা ঠিক করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন আমাকে। তবে জরুরি ভিত্তিতে আমরা হাসপাতালের উদ্যোগে আগত রোগীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। আশা করি সন্ধ্যার আগেই ফের চালু হবে।’