রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নারীসহ পাঁচজন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত তাদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। পরে তাদের পাকস্থলী পরিষ্কার করা হয়।
কুমিল্লার বরুড়া রাজগ্রামের বাসিন্দা জসীমউদ্দীন তার সৌদিপ্রবাসী ছেলেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে নামিয়ে দেয়ার পর একটি বাসে করে ফিরছিলেন। বাসে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন তিনি। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে ফার্মগেটে বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে তার ভাগ্নে ফারুক হোসেন ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করান।
ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। তার কাছ থেকে টাকা এবং স্যামসাং মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা।’
তার কাছে কত টাকা ছিল সেটি বলতে পারেননি ফারুক।
কুষ্টিয়ার সবুজ মিয়াকে মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে মতিঝিল নটর ডেম কলেজের সামনে বাসস্ট্যান্ড থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যান তার ফুফাতো ভাই রাকিবুল।
তিনি জানান, পথচারীর ফোন পেয়ে তার ভাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তার কাছে থাকা মোবাইল ও ১৩ হাজার টাকা খোয়া গেছে বলে জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের ৩২ বছরের রোকেয়া সুলতানা। সোনারগাঁও থেকে বাসে করে মেয়ে সিনহা আক্তারকে নিয়ে টিকা দিতে যাচ্ছিলেন জেলার ভবনাথপুর নতুন সেবা ক্লিনিকে। তার পাশের সিটে বসা এক নারী তাদের বরই খাওয়ান। তার কিছুক্ষণ পরে তারা অচেতন হয়ে পড়েন।
ভুক্তভোগীর জা আয়েশা আক্তার বলেন, তারা খবর পেয়ে মা-মেয়েকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনারগাঁও ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, পরে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যান। তাদের কাছে থাকা টাকা, মোবাইল খোয়া গেছে।
রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর আলিয়া পাড়াগ্রামের আলতাফ হোসেন ব্যবসা করেন গরু বেচাকেনার। চার ব্যবসায়ী মিলে গরু কিনতে রংপুরে গিয়ে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন।
ভুক্তভোগীর ভাতিজা হাজি মোহাম্মদ সেন্টু বলেন, ‘আমার চাচাকে রংপুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান তার সঙ্গে থাকা লোকজন। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় আনা হয়। পরে তার পাকস্থলী পরিষ্কার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আলতাফ হোসেনের কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়েছেন অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘গতকাল অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ঢাকা মেডিক্যালে এসেছে নারীসহ পাঁচজন। চারজনের স্টোমাক ওয়াশ করা হয়। আর একজনকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ৫ জনকেই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি ঘটনা সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।’