বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হলের সিটের সেই নোটিশ ‘সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব মেটাতে’

  •    
  • ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২২:৫৬

হল প্রভোস্ট নুসরাত নিউজবাংলাকে জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে জানালার পাশের সিট নিয়ে ছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক কোন্দল হয়। তা মেটাতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

যে সিনিয়র বা যার সিজিপিএ বেশি, পাবেন হলের জানালার পাশের সিট। ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল কর্তৃপক্ষের এমন নোটিশ নিয়ে সমালোচনা চলছে ফেসবুকে।

তবে হল প্রভোস্ট জানালেন, জানালার পাশের সিট নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকদিন ধরে কোন্দল চলছিল। সেটি নিরসনেই এই নিয়ম তিনি চালু করেছেন। এটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নয়, একান্তই তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।

হলের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সিট নিয়ে দ্বন্দ্ব মেটাতে হল প্রভোস্টের এই সিদ্ধান্ত তারা মেনে নিয়েছেন।

হলের নোটিশ বোর্ডে টাঙানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সব আবাসিক সিটপ্রাপ্ত ছাত্রীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সিনিয়রের ভিত্তিতে জানালার দুই পাশে সিটে উঠতে পারবে এবং জুনিয়ররা দরজার দুই পাশে সিটে উঠতে পারবে। উল্লেখ্য যে, সিনিয়র এবং জুনিয়র দুজন যদি একই শিক্ষাবর্ষের হয় তবে রেজাল্ট যার বেশি থাকবে সে ডানপাশের সিটে উঠতে পারবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এইচ এম এরশাদ নিউজবাংলাকে জানান, এটি প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি না। তবে হল প্রাধ্যক্ষ নুসরাত পারভীনের নির্দেশে লিখিতভাবে বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছে।

এমন নির্দেশনায় অসন্তোষ দেখা দেয় শিক্ষার্থীদের মাঝে। অনেকে ফেসবুকেও বিষয়টির সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, লটারির মাধ্যমে সিট বণ্টন করা যেত। সিনিয়র-জুনিয়র কিংবা সিজিপিএর ভিত্তিতে সিট বণ্টন যৌক্তিক নয়।

হল প্রভোস্ট নুসরাত নিউজবাংলাকে জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে জানালার পাশের সিট নিয়ে ছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক কোন্দল হয়।

তিনি বলেন, ‘এই হলে সব মিলিয়ে ১ হাজার ১৪০টি সিট রয়েছে। প্রত্যেকটি কক্ষে ৪ জন করে ছাত্রী থাকতে পারলেও ছোট ১৮টি কক্ষে ৩ জন করে থাকতে পারবে।

‘এর মধ্যে প্রথম ধাপে আমরা ৫৮০ জনকে সিট দিয়েছি। তারা জানালার পাশের সিটে থাকতে চাচ্ছে। এ নিয়ে কেউ কাউকে ছাড় না দেয়ায় গত এক সপ্তাহ যাবত সিনিয়র ও জুনিয়ররা নিজেদের মধ্যে বাগবিতণ্ডাসহ কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমন অবস্থায় আমরা ছাত্রীদের বুঝালেও তারা জানালার পাশের সিটে থাকতে চাচ্ছিল, কিন্তু জানালার পাশে মাত্র একটি সিটে ৪ জনকে এক সঙ্গে তো জায়গা দেয়া সম্ভব না। তাই আমরা ওই নির্দেশনা দিয়েছি। এটি শুধুমাত্র ছাত্রীদের জানানোর জন্যেই দেয়া। প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি হলে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাডে লিখে স্বাক্ষরসহ সিল দিতাম।’

প্রভোস্ট জানান, নোটিশটি সোমবার বেলা ১১টার দিকে টাঙানো হয়। কে বা কারা এর ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়ায় ভুল বোঝাবুঝি ও সমালোচনা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরাই এই দ্বন্দ্ব নিরসনে সমাধান চেয়েছে বলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া।

ছাত্রীরা এই নোটিশে সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ছাত্রীদের বুঝিয়ে বলেছি। তারাও বুঝতে পেরেছে এভাবে নির্দেশনা না দিলে নিজেদের মধ্যে হট্টগোলসহ অসন্তোষ চলবেই। মঙ্গলবার সকাল থেকে ছাত্রীরা নির্দেশনা অনুযায়ী হলে উঠেছে।’

ওই হলের ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অর্পিতা বাউল বলেন, ‘জুনিয়ররা জানালার পাশে থাকতে সমস্যা কী? সিনিয়রদের সুবিধার্থে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদি লটারির মাধ্যমে সিট দেয়া হতো, তাহলে কারও মাঝেই অসন্তোষ থাকত না। যে যেখানে সিট পেত, সেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকত।’

হলের আরেক ছাত্রী চারুকলা বিভাগের অন্তরা সরকার বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা তো মানতেই হবে। এ নির্দেশনটিও অগ্রহণযোগ্য না। কারণ আমরাও সিনিয়র হলে জানলার পাশেই সিট পাব।’

সঙ্গীত বিভাগের ছাত্রী বর্নালী রানী বলেন, ‘আমরা সিনিয়র হয়েছি বলে কর্তৃপক্ষ জানলার পাশে সিট দিয়েছে। জুনিয়ররাও একসময় এ সুবিধা ভোগ করবে। এছাড়া সিজিপিএতে ভালো হলেও সিট পাবে। নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোলের চেয়ে নির্দেশনা মানা সবারই দায়িত্ব।’

এ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা চাইলেও সবাইকে এক সঙ্গে জানালার পাশে সিট দেয়া সম্ভব না। এছাড়া লটারির মাধ্যমে সিট দেয়া হলেও বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ থেকেই যেত।

‘ফলে এমন নির্দেশনাই ভালো হয়েছে। আজ থেকে ছাত্রীরাও স্বাচ্ছন্দ্যে হলে প্রবেশ করেছে। এ নিয়ে কারও ভুল বুঝা ঠিক না।’

এ বিভাগের আরো খবর