বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাবিতে ডিনের সই নকল করে ১১ লাখ টাকা চুরি!

  •    
  • ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২২:৪৯

অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় ফার্মেসি অনুষদের উন্নয়ন তহবিল ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফার্মেসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের দুটি হিসাব রয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে উন্নয়ন তহবিলের হিসাব থেকে ৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব থেকে ৩ লাখ টাকা সরানো হয়েছে।

চেকবই চুরি করে ডিনের সই নকল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের দুটি ব্যাংক হিসাব থেকে ১০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা চুরির অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনা তদন্তে গত ১০ জানুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও এখনো তা জমা দিতে পারেনি কমিটি।

তবে কমিটির এক সদস্য জানান, কমিটির একজন সদস্য করোনা আক্রান্ত হওয়ায় অনেকদিন কাজ করা যায়নি। এখন তদন্ত শেষ হয়েছে। আগামীকালই (বুধবার) প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

অনুষদ-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় ফার্মেসি অনুষদের উন্নয়ন তহবিল ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফার্মেসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের দুটি হিসাব রয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে উন্নয়ন তহবিলের হিসাব থেকে ৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব থেকে ৩ লাখ টাকা সরানো হয়েছে।

উন্নয়ন তহবিলের টাকা উত্তোলনে ব্যবহার করা হয়েছে অনুষদের তৎকালীন ডিন অধ্যাপক ড. এস এম আবদুর রহমানের সই। আর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের টাকা উত্তোলনে ব্যবহার করা হয়েছে অনুষদের ডিন আবদুর রহমান ও ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শাহ এমরানের সই।

তৎকালীন ডিন আবদুর রহমানের দাবি, তার ও শাহ এমরানের সই নকল করে এই টাকা তোলা হয়েছে।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘অনুষদের হিসাবরক্ষক রাশেদ সাজ্জাদ এই কাজ করে থাকতে পারে। কারণ তার কাছেই দুটি হিসাবের চেক বই থাকে। আমরা ধারণা, করোনাকালে কেউ যেহেতু ছিল না, সেই সময়ই তালা খুলে নিরিবিলি অবস্থায় এটি করা হয়েছে। এটি আমি সন্দেহ করছি কারণ এর আগে আমার ব্যক্তিগত রুমের তালা খুলেও টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে।’

তবে হিসাবরক্ষক রাশেদ সাজ্জাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটা আলমারিতে চেক বই রাখা হয়। সেই আলমারি থেকেই চেক চুরি করে কেউ নিয়ে গেছে। আমার ধারণা এই আলমারির চাবি আমি ছাড়াও অন্য কারো কাছে আছে।’

অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জান চলে যাবে কিন্তু আমানত খেয়ানত করবো না। হিসাবরক্ষকের কাজ আমি আগের ডিন স্যারের সময়ও করেছি। কিন্তু কখনো এরকম কিছু হয়নি।’

গত ১৩ জানুয়ারি নতুন ডিন নির্বাচন হওয়ার পর ড. আবদুর রহমান এখন সদ্য সাবেক ডিন। ডিনের দায়িত্ব শেষ করার আগে অডিট করার সময় টাকা গায়েব হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন অধ্যাপক আবদুর রহমান। এরপর তিনি বিষয়টি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানকে জানান। পরে উপাচার্যের নির্দেশে গত ১০ জানুয়ারি তিনি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ। সদস্যরা হলেন- ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকির আহমেদ চৌধুরী ও ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মুহিত।

আবদুর রহমান বলেন, ‘হিসাবরক্ষক রাশেদ সাজ্জাদের মাধ্যমে এই বছরের জানুয়ারির শুরুতে টাকা চুরির বিষয়টি জানতে পারি। সব হিসাব নতুন ডিনকে বুঝিয়ে দিতে আমি হিসাবরক্ষককে অডিট রিপোর্ট দিতে বলি। তখনই সে বলে- স্যার, এই ঘটনা ঘটেছে।’

সদ্য সাবেক এই ডিন বলেন, ‘আমাদের দশ পাতার দশটা চেক বই ছিল। দশটাই আমার আগের যিনি ডিন ছিলেন তিনি উঠিয়ে গেছেন। এর মধ্য থেকে একটি চেক বই সরিয়ে এই কাজটি করা হয়েছে। যেটি আমার সামনে কখনো আসেইনি। কারণ সেই চেক বইয়ের সিরিয়াল অনেক পরে ছিল।’

টাকা চুরির বিষয়টি এতোদিন কেন চোখে পড়েনি জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনাকালে আমি অফিসে যাইনি। আর এ সময়ের মধ্যে টাকাও উঠানোর প্রয়োজন হয়নি। হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব হচ্ছে অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট নিয়ে মাঝে সাঝে আমাকে দেখানো। কিন্তু করোনাকালে সে স্টেটমেন্ট নিতে দেরি করেছে। আমার মনে হয় এতে সে-ও জড়িত।’

তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ড. মো. আব্দুল মুহিত বলেন, ‘আমাদের কাজ শেষ। এখন আমরা তদন্ত রিপোর্ট লিখছি। কালই আমরা তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়ে দিতে পারব।’

তদন্তের তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. জাকির আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘গোপনীয়তার স্বার্থে তা বলা সম্ভব নয়।’

এ বিভাগের আরো খবর