বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বদলি কারাভোগ: আসল-নকল দু’জনই জেলে

  •    
  • ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২২:১৮

আদালত যাদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছে তারা হলেন- সোহাগ ওরফে বড় সোহাগ, নকল সোহাগ (ভুয়া পরিচয়দানকারী), বড় সোহাগের জামিন আবেদনকারী ও ওকালতনামায় স্বাক্ষরকারী আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজী এবং অপর আইনজীবী মো. ইব্রাহীম হোসেন। এছাড়াও আছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা।

মাসে পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির হয়ে আরেকজনের কারাভোগের ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে জাল কাগজ তৈরি ও ছদ্মবেশে প্রতারণার অভিযোগে মামলার অনুমতি দিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম।

মঙ্গলবার ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের পেশকার মিজানুর রহমান ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার আবেদন করে এ ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করেন।

আবেদনটির শুনানি নিয়ে বিচারক মোহাম্মদ নূরুল হুদা চৌধুরি কোতয়ালি থানার ওসিকে এজাহার হিসাবে গণ্য করার নির্দেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মাহমুদুর রহমান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে নকল সোহাগকে (প্রকৃত নাম মো. হোসেন) কারাগার থেকে ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে আনা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল কাদের পাটোয়ারী দুই সোহাগকে (আসল ও নকল) আদালতে উপস্থাপন করেন।

শুনানিতে তিনি আদালতকে বলেন, ‘টিটু হত্যা মামলায় চার বছর ধরে যে ব্যক্তি কারাভোগ করছেন তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত সোহাগ নন। মো. হোসেন নামের এই ব্যক্তি সোহাগের সঙ্গে যোগসাজশে পরিচয় গোপন করে চার বছর ধরে মিথ্যা হত্যার দায় নিয়ে কারাভোগ করে আসছেন। তাই তাকে ওই হত্যা মামলার দায় থেকে মুক্তি দেয়া হোক। পাশাপাশি আদালতকে ভুল তথ্য দিয়ে আসল অপরাধীকে আড়াল করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করছি।’

আদালত যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা হলেন- সোহাগ ওরফে বড় সোহাগ, নকল সোহাগ (ভুয়া পরিচয়দানকারী), বড় সোহাগের জামিন আবেদনকারী ও ওকালতনামায় স্বাক্ষরকারী আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজী এবং অপর আইনজীবী মো. ইব্রাহীম হোসেনসহ অজ্ঞানামা ব্যক্তিরা।

তাদের বিরুদ্ধে জাল কাগজ তৈরি, ভুয়া পরিচয়ে এক ব্যক্তিকে অন্য ব্যক্তি সাজানোর দায়ে এজাহার করার আদেশ আসে।

গত রোববার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-১০ এর অপারেশন টিম ও সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকা থেকে বড় সোহাগকে গ্রেপ্তার করে।

রাজধানীর কদমতলি থানার নোয়াখালী পট্টিতে ২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর হুমায়ুন কবির টিটুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বড় সোহাগ, মামুন, ছোট সোহাগসহ আরও ৩-৪ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। ওই মামলার ১ নম্বর আসামি বড় সোহাগকে গ্রেপ্তার হয়। ২০১৪ সালের ১৬ মে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর বড় সোহাগের অনুপস্থিতিতে তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত।

র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক জানান, রায় প্রকাশের পর বড় সোহাগ পরিকল্পনা করে তার ফুফাতো ভাই মো. হোসেনকে তার পরিচয়ে আদালতে হাজির করার ব্যবস্থা করে। ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি সোহাগ পরিচয়ে হোসেন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠায়।

পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, মাসিক ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে জেল হাজতে যায় নকল সোহাগ। তাকে ২-৩ মাসের মধ্যে কারাগার থেকে বের করে আনারও আশ্বাস দেন আসল সোহাগ। তবে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে এক সাংবাদিক টিটু হত্যা মামলায় একজনের পরিবর্তে অন্যজনের জেল খাটার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন। আদালত কারা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন চান। প্রতিবেদনে ২০১০ সালে গ্রেপ্তার করা আসামি সোহাগ ও কারাগারে থাকা নকল সোহাগের অমিলের বিষয়টি উঠে আসে। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের রিপোর্টেও বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়।

২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকে র‍্যাব-১০ এর অপারেশন টিম ও র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা টিম আসল সোহাগকে ধরার চেষ্টা করছিল। ইতোমধ্যে বিশেষ দায়রা আদালত ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ প্রকৃত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এ তথ্য জানতে পেরে সোহাগ দেশত্যাগের চেষ্টা শুরু করেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তনের পর পাসপোর্ট তৈরি করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা সংগ্রহ করেন তিনি। দেশত্যাগের ক্ষেত্রে করোনার টিকা বাধ্যতামূলক হওয়ায় শনিবার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে তিনি মিটফোর্ড হাসপাতালে যান। এ সময় তাকে গ্রেপ্তার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বড় সোহাগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় দুটি হত্যাসহ ১০টি মামলা রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর