বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাসে ডাকাতির ঘটনায় ৬ জনকে খুঁজছে পুলিশ

  •    
  • ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২০:৫৯

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহাদাত হোসেন সুমা বলেন, ‘বাসে ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও ছয়জনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সামনে এসেছে।’

রাজধানীতে চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনায় আভিযুক্ত আরও ছয়জনকে খুঁজছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরই মধ্যে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আটজন জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সম্পৃক্ততার তথ্য দিয়েছে।

বাস ভাড়া করে ডাকাতির অভিযোগে গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানী ও আশপাশের এলাকা থেকে আটজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবির তেজগাঁও বিভাগ। এর পরই তাদের রিমান্ডে নেয়া হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, এর আগেও একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন এই আটজন। বিশেষ করে রাজধানীর উপকণ্ঠে তাদের সদস্যরা বেশি সক্রিয় বলে তথ্য মিলেছে।

ডাকাত চক্রটির সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, রাত গভীর হলেই চক্রের সদস্যরা প্রায়ই বাস নিয়ে ডাকাতিতে নেমে পড়ে। তাদের নামে বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহাদাত হোসেন সুমা বলেন, ‘বাসে ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও ছয়জনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সামনে এসেছে। তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে চক্রের সবাইকেই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তাদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আট ডাকাতের নামে মানিকগঞ্জ, শিবালয় ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা পাওয়া গেছে। সেখানেও তারা মহাসড়কে ডাকাতি করেছে বলে জানা গেছে। তারা সবাই পেশাদার ডাকাত। এর আগে তারা একাধিকবার গ্রেপ্তার হলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও একই পেশায় ফিরে গেছেন।’

পুলিশ জানিয়েছে, গত ২০ জানুয়ারি ডাকাত দলের সদস্যরা আমিনবাজার থেকে আর.কে.আর পরিবহনের একটি বাস ভাড়ার কথা বলে সাভারের গেন্ডা এলাকায় নিয়ে যান। সেখান থেকে তারা প্রথমে বাসের চালক ও হেলপারকে জিম্মি করে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেন। পরে বাসটি নিয়ে ঢাকা মহানগর এলাকার বিভিন্ন সড়কে ঘুরতে থাকেন।

টার্গেট করে যাত্রী উঠিয়ে পরবর্তীতে অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে এই চক্র। এরপর হাত-মুখ বেঁধে তাদের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাদের নির্জন স্থানে নামিয়ে দেন তারা।

ভুক্তভোগীদের মধ্যে টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম সজীবও ছিলেন। তিনি প্রাণে বেঁচে ফিরলেও চোখ বেঁধে রাতভর তাকে বেদম পেটান ডাকাত দলের সদস্যরা।

এ ঘটনার পর তিনি থানায় গিয়ে মামলা করতে না পেরে ফেসবুকে একপি পোস্ট দেন। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর আইজিপির নির্দেশে মামলার তদন্তে নামে ঢাকা মেহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘটনার সময় যাত্রীদের মোবাইল ফোনের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে পিন নম্বর নিয়ে টাকা তুলে নেয় ডাকাত দলের সদস্যরা। ওই বিষয়টি সামনে নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপর তারা ঢাকার একটি বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করেন। ওই এজেন্ট থেকে ডাকাত দলের সদস্যরা টাকা উত্তোলন করেন বলে নিশ্চিত হন গোয়েন্দা সদস্যরা।

পরে পুলিশ ওই দোকানের সন্ধানে নামে। একপর্যায়ে সেখান থেকে একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া যায়। ওই ফুটেজে এক নারীকে টাকা তুলতে দেখা যায়। এরপর ওই নারীর সূত্র ধরে একে একে আট ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে ওই নারীর কতটুকু যুক্ত তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক অবস্থায় এই চক্রে ১৪ জনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। তারা সবাই বিভিন্ন সময় সাভার, গেন্ডা, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও গাজীপুর এলাকার পেশাদার ডাকাত বলে চিহ্নিত। তারা বেশিরভাগ সময় এসব এলাকায় ডাকাতি করলেও মাধ্যেমধ্যে তারা ঢাকায় এসে এ ধরনের ঘটনা ঘটান।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগেই অপরাধীরা নিরাপদ এলাকা বেছে নেয়। বাসটি যখন ১২ ঘণ্টা ঘুরছিল এবং ডাকাতি হচ্ছিল তখন বাসটিকে নজরদারিতে আনা হয়নি। রাস্তায় ৫০০টি গাড়ির ভেতর একটিতে ডাকাতি চললে নজরে আসার সুযোগ থাকে না।

‘যখনই এ রকম কয়েকটি ঘটনা ঘটে তখনই আমরা তৎপরতা শুরু করি। তারপর এসব ঘটনা আবার কমে যায়। এখানে আমরা কারও অবহেলার বিষয়টি বলতে চাচ্ছি না। আমরা যদি ঠিকভাবে এগুলো নজরদারিতে রাখি, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই এসব ঘটনা কমে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখনই কোনো ডাকাত চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করি, দেখা যায় মামলার বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে তারা আবার জামিনে বের হয়ে একই পেশায় যুক্ত হন। তাদের গ্রেপ্তার করতে যত সময় লাগে, তার চেয়েও কম সময়ে তারা জামিনে বের হয়ে যান।’

পুলিশের এই কর্মকতা বলেন, ‘ যে বাসে ডা. শফিকুলের কাছ থেকে ডাকাতি করা হয়, সে বাসটি ডাকাত দলের সদস্যরা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে ভাড়া নেয়। এক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত বাস কর্তৃপক্ষের কোনো জড়িত থাকার প্রমাণ আমরা পাইনি।’

এ বিভাগের আরো খবর