নীলফামারীর ডিমলায় চার বছরেও ভাঙা ব্রিজটি মেরামত করা হয়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার ২০ হাজার মানুষ। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করায় যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের খগারহাটে সরেজমিনে দেখা গেছে দুর্দশার এমন চিত্র।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের খগারহাটে নির্মিত ব্রিজটি ব্যবহার করে যাতায়াত করেন এক, দুই, তিন ও চার নম্বর ওয়ার্ডের ১৫ হাজার মানুষ। ২০১৫-২০১৬ সালে উন্নয়ন সংস্থা পল্লীশ্রী, ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের সহযোগিতায় ব্রিজটি নির্মাণ করা হয় ১০ লাখ ৭ হাজার টাকা ব্যয়ে।
২০১৭ সালের বন্যায় পানির স্রোতে ব্রিজটির মাঝের চারটি পিলার দেবে যাওয়ায় হেলে পড়ে। ভেঙে যায় ব্রিজের দুই দিকের সংযোগ সড়ক। এর পরও অরক্ষিত এই ব্রিজের দুই প্রান্তে বাঁশের চাটাই দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন স্থানীয়রা।
ঝাড়সিংহেশ্বর এলাকার নাজমুল হোসেন জানান, সেতু ও সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগে ব্রিজের দুই প্রান্তে বাঁশের চাটাই দিয়ে কোনো রকম চলাচলের উপযোগী করে। ফলে এখন আসা যাওয়া করা হচ্ছে।
মোক্তার হোসেন নামে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জানান, পুরো এলাকা চর। তিস্তা নদীবেষ্টিত। ব্রিজটিও চরের মধ্যে। অনেক ফসল হয় এখানে। ফসল বিক্রির জন্য নানা দুর্ভোগে পড়তে হয়। নৌকা ব্যবহার করে এবং গবাদি পশুগুলোকে খালের মধ্য দিয়ে নিয়ে পারাপার করতে হয়।
জোসনা বেগম নামে এক গৃহিণী জানান, ব্রিজটি ঠিক না থাকায় বেশি কষ্ট করতে হচ্ছে অসুস্থ মানুষদের। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।
তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীরা ব্রিজটির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পায়। বন্যার সময় হেঁটে অতিক্রম করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়।
পল্লীশ্রী ডিমলা উপজেলা সমন্বয়কারী পুরান চন্দ্র রায় বলেন, ‘ব্রিজটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরে জানানো হয়েছে। আমাদের সহযোগিতায় ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন সরকারি উদ্যোগে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।’
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘চর এলাকা হওয়ায় কষ্টের শেষ নেই ওই এলাকার বাসিন্দাদের। বিশেষ করে বন্যার সময় এলে ভয়ংকর অবস্থা তৈরি হয়। চার বছর হয়ে গেল এখনো কোনো উদ্যোগ দেখছি না ব্রিজটি নির্মাণের বিষয়ে।
‘এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। দ্রুত ব্রিজ নির্মাণ করা হলে দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবেন মানুষ।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়েছি। এখনও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আগে উপজেলা সড়ক, এরপর ইউনিয়ন সড়কে ব্রিজ নির্মাণের অগ্রাধিকার রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই ব্রিজটি গ্রামে সে কারণে একটু সময় লাগছে। তবে সেখানেও নতুন করে নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে।’