বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপি নয়, লবিস্ট নিয়োগে এক প্রবাসী: ফখরুল

  •    
  • ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৬:০৮

‘একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্তৃক লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি আজ আমাদের দলের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে এই সরকার। আমরা বলতে চাই, দেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রবাসী কোনো পদক্ষেপ কোথাও নেয়, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য যদি কিছু করে, সে পদক্ষেপের দায়িত্ব তার, বিএনপির নয়।’

বিএনপি বাংলাদেশের বিষয়ে বিদেশে কোনো লবিস্ট নিয়োগ করেনি জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, এটি করেছেন একজন প্রবাসী। তবে উন্নয়ন সহযোগীদেরকে দেশের পরিস্থিতি জানাতে চিঠি দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। বলেছেন, এই চিঠির সঙ্গে লবিস্ট নিয়োগের কোনো সম্পর্ক নেই।

বাংলাদেশের ওপর ব্যবস্থা, এমনকি নিষেধাজ্ঞা দিতে বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আসা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফখরুল।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্তৃক লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি আজ আমাদের দলের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে এই সরকার।

‘আমরা বলতে চাই, দেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রবাসী কোনো পদক্ষেপ কোথাও নেয়, দেশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য যদি কিছু করে, সে পদক্ষেপের দায়িত্ব তার, বিএনপির নয়।’

তবে সেই প্রবাসীর উদ্যোগে বিএনপির সমর্থন আছে বলেও জানান ফখরুল। বলেন, ‘ওই পদক্ষেপকে নৈতিক সমর্থনের দায়িত্ব বাদে অন্য কোনো দায়দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। তবে বিশ্বের দেশে দেশে প্রবাসীদের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য এ ধরনের দেশপ্রেমিক পদক্ষেপকে বিএনপি সাধুবাদ জানায় এবং তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।’

চিঠি প্রসঙ্গ

বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের চিঠি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ফখরুল বলেন, ‘বিদেশে লেখা আমার ওই চিঠিসমূহ কোনো লবিস্ট নিয়োগের বিষয় নয়, মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান মাত্র।’

তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে কথা বলছেন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী। এই চিঠি দেখিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। আপনারা (গণমাধ্যমকর্মীরা) দেখুন, ওই চিঠি কাকে লেখা হয়েছিল এবং চিঠির বিষয়বস্তু কী ছিল।’

বিএনপি কেন দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিদেশিদের চিঠি দিয়েছিল, তার কারণও তুলে ধরেন ফখরুল। বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার সকল ব্যক্তিবর্গদের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সবচেয়ে বড় ভ্যানগার্ড।

‘আর তাই, বিএনপি তার আন্দোলন সংগ্রামের অংশ হিসেবেই দেশের উন্নয়ন অংশীদারদের সমর্থন চায়, মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ চায়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামে দেশি-বিদেশি সব অংশীদারদের এই সরকারের সকল অপকর্ম সম্পর্কে অবগত করে রাখতে চায়।

‘বিদেশে লেখা আমার ওই চিঠিগুলো কোনো লবিস্ট নিয়োগের বিষয় নয়, মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতি আহ্বান মাত্র।’

জনগণের করের টাকায় লবিস্ট নিয়োগে সরকার

ফখরুলের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র সরকার কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থাকে ধামাচাপা দিয়ে সরকার জনগণের করের টাকায় আমেরিকায় লবিস্ট নিয়োগ করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে এই বিষয়টি স্বীকৃত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের একটি বক্তব্য স্মরণ করিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘তার ভাষ্য মতে, সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। খুন, গুমের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির দায় কিংবা ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতায় নিমজ্জিত প্রতিষ্ঠানের দায় রাষ্ট্র কিংবা সরকার কীভাবে জনগণের টাকায় ভাবমূর্তি রক্ষার নামে ব্যয় করে?

‘বিএনপি মনে করে, জনগণের টাকায় লবিস্ট নিয়োগ করে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অপরাধে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টিই প্রমাণিতভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’

ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি মনে করে, সরকার জড়িত না থাকলে তা প্রমাণের জন্য তারা ওই সাত কর্মকর্তাকে (র‌্যাবের বর্তমান ও সাবেক ৭ কর্মকর্তা, যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে) আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করত। খুন, গুম, গায়েবি মামলা দায়ের বন্ধ করে, নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে হেঁটে সরকার পদত্যাগ করত।’

২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ৩ বছরে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সংশ্লিষ্টতায় ৯০ লাখ (৯ মিলিয়ন) ডলার খরচ করে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। বলেন, ‘বিএনপি জানতে চায়, সজীব ওয়াজেদ জয়ের ওই টাকার উৎস কী ছিল, কীভাবে ওই টাকা বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়েছিল?’

বাংলাদেশ এখন গণতন্ত্রহীন, মানবাধিকারহীন

ফখরুল মনে করেন, গোটা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ গণতন্ত্রহীন, মানবাধিকারহীন, ন্যায় বিচারহীন একটি দেশ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। তিনি বলেন, ‘মানুষের ভোটের অধিকার হরণের জন্য সরকারি বাহিনী ব্যবহার করে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, রাজনৈতিক গায়েবি মামলার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত এই সরকারের অপকর্মের ফিরিস্তি আজ সর্বজনবিদিত।’

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ইঙ্গিত করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশ হলে সরকার প্রথমেই সেই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যধারা শুরু করত, গ্রেপ্তার করত এবং জাতিকে কলঙ্কের দাগ থেকে উত্তরণের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে জাতীয় সংকট হিসাবে সবার সহায়তায় এই পরিস্থিতির উত্তরণের চেষ্টা করত।

‘অথচ, কর্তৃত্ববাদী সরকার হাঁটছে উল্টো পথে। গুমের শিকার পরিবারের বাড়ি বাড়ি পুলিশ পাঠিয়ে হুমকি ধামকি দিচ্ছে, খুনিদের রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা থেকে প্রমাণ হয় সরকারের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা এই সব খুন গুমের সঙ্গে জড়িত।’

এ বিভাগের আরো খবর