শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় এজাহার পরিবর্তনের মামলায় রাজশাহীর পুঠিয়া থানার সাময়িক বহিস্কৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিল উদ্দিন আহমেদকে জামিন দেয়নি হাইকোর্ট।
বরং আগামী চার মাসের মধ্যে মামলাটির তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে ওসি শাকিলের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান, তার সঙ্গে ছিলেন মামুন মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
পুঠিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিল উদ্দিন আহমেদ ওরফে শাকিলকে গত ১৩ ডিসেম্বর কারাগারে পাঠায় রাজশাহী বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালত।
হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, ১২ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন শাকিল। শুনানি শেষে বিচারক ইসমত আরা তার জামিন নাকচ করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলা থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১১ জুন পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের একটি ইটভাটা থেকে উপজেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। আগে তিনি ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সংগঠনের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
নির্বাচনের ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করা হয়। ফল মেনে না নিয়ে রাজশাহীর আদালতে নুরুল ইসলাম একটি মামলা করেন। মামলা চলার সময় একই বছরের ১০ জুন রাতে নিখোঁজ হন নুরুল ইসলাম। পরদিন ইটভাটায় তার লাশ পাওয়া যায়।
নুরুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে নিগার সুলতানা পরদিন পর পুঠিয়া থানায় আব্দুর রহমানসহ আটজনের নামে মামলা করেন। ওসি শাকিল এজাহারটি সংশোধন করতে বলেন বাদীকে। বাদী এজাহার সংশোধন করেন।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় নিহতের স্ত্রী রাজশাহীর আদালতে আরেকটি মামলা করেন। তখন আদালতের নির্দেশে পুলিশ নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার একটি এজাহার করেন। তবে পুলিশের করা এজাহারে মামলায় কোনো আসামির নাম ছিল না। সবাই অজ্ঞাত ছিল।
বাদী নিগার সুলতানা আদালতকে বলেন, যে এজাহারটি তিনি থানায় দিয়েছিলেন পুলিশ সেটি আদালতে জমা দেননি। মনগড়া একটি এজাহার দিয়েছেন যা তিনি করেননি।
এ ঘটানয় ওসি শাকিলের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন নিগার সুলতানা।
রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওসি শাকিলকে সাময়িক বরখাস্তসহ তার বিরুদ্ধে মামলা করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দেয়।