বেনাপোল বন্দর দিয়ে মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে দুই দেশের বন্দরে আটকা পড়েছে শত শত ট্রাক।
তবে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলেও উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রয়েছে।
পেট্রাপোল বন্দরে নতুন এলপি ম্যানেজারের নিত্যনতুন আইনে নানা হয়রানির অভিযোগে সোমবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ বন্দরের বিভিন্ন সংগঠনের ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো শ্রমিকদের ওই কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে।
হয়রানি বন্ধসহ নতুন এলপি ম্যানেজারের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পেট্রাপোল বন্দরের স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র জানান, করোনার কারণে তাদের ব্যবসা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। আগে যেখানে ২৪ ঘণ্টায় ৭০০ থেকে সাড়ে ৭০০ পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে রপ্তানি হতো, করোনার কারণে সেখানে মাত্র সাড়ে ৩০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
এ ছাড়া নতুন এলপি ম্যানেজার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো কথা না বলেই বন্দর এলাকায় প্রবেশের ওপর নতুন নতুন আইন তৈরি করছেন বলেও অভিযোগ করেন কার্তিক।
তিনি বলেন, ‘নতুন এলপি ম্যানেজার বিএসএফকে কাজে লাগিয়ে পরিবহনকর্মীদের বন্দরের ভেতর প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। আইসিপিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিএসএফের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে পরিবহনকাজে জড়িত কর্মীদের।’
বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে তাই গত বৃহস্পতিবারও পেট্রাপোল সেন্ট্রাল পার্কিংয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী পক্ষগুলো।
সাধারণ সম্পাদক কার্তিক জানান, ইউনিক কার্ড ছাড়া কোনো পরিবহনকর্মীকে আইসিপি ও বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এতে আমদানি-রপ্তানি কাজে জড়িতদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ জন্য গত সপ্তাহেও দুই দিন ৪ ঘণ্টা করে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি বন্ধ রাখা হয়েছিল।
ব্যবসায়ীসহ পরিবহনকর্মীদের দাবি, নতুন কার্ড তৈরি না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো নিয়মে তাদের আইসিপিতে প্রবেশ করতে দিতে হবে। দাবি না মানা পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।
নিউজবাংলাকে বেনাপোল বন্দরের ডেপুটি পরিচালক মামুন তরফদার বলেন, ‘ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ধর্মঘটের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সোমবার থেকে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দরে লোড-আনলোড প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রয়েছে।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, ‘পেট্রাপোল বন্দরে বন্দর ব্যবহারকারীদের ধর্মঘটের কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দিন ধরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে উভয় বন্দর এলাকায় শত শত পণ্যট্রাক আটকা পড়েছে। যার অধিকাংশই রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল।’
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি রাজু আহম্মেদ বলেন, আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রয়েছে।