যে বেশি সিনিয়র বা যার সিজিপিএ বেশি তিনি জানালার পাশের সিট পাবেন বলে নিয়ম করেছে ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল কর্তৃপক্ষ।
হলের নোটিশ বোর্ডে টাঙানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সব আবাসিক সিটপ্রাপ্ত ছাত্রীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সিনিয়রের ভিত্তিতে জানালার দুই পাশে সিটে উঠতে পারবে এবং জুনিয়ররা দরজার দুই পাশে সিটে উঠতে পারবে। উল্লেখ্য যে, সিনিয়র এবং জুনিয়র দুজন যদি একই শিক্ষাবর্ষের হয় তবে রেজাল্ট যার বেশি থাকবে সে ডানপাশের সিটে উঠতে পারবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এইচ এম এরশাদ নিউজবাংলাকে জানান, এটি প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি না। তবে হল প্রাধ্যক্ষ নুসরাত পারভীনের নির্দেশে লিখিতভাবে বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছে।
নোটিশে নেই প্রভোস্টের সিল ও স্বাক্ষর। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন আদৌ এটি হল কর্তৃপক্ষ দিয়েছে কি না।
এরশাদ বলেন, ‘সোমবার বেলা ১১টার দিকে আমি এ বিজ্ঞপ্তি লিখেছি। এটি প্রাতিষ্ঠানিক চিঠি না হওয়ায় হল প্রভোস্টের সিল ও স্বাক্ষর নেয়া হয়নি। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে না টানিয়ে হলের এখানে রাখা হয়৷ কে বা কারা ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।’
কেন এ ধরনের নির্দেশনা সে বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ নুসরাত পারভীন বলেন, ‘হলে কোন সিটে কোন শিক্ষার্থী উঠবে, কে জানালার পাশে আর কে দরজার পাশে থাকবে- এ নিয়ে সমস্যার সমাধান চেয়েছিল শিক্ষার্থীরা। তাই এই সমাধান দেয়া হয়েছে। এটি প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নয়।’
এমন নির্দেশনায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। অনেকে ফেসবুকেও বিষয়টির সমালোচনা করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের চারুকলা বিভাগের সুরাইয়া আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জানালার পাশের সিটগুলো সবারই পছন্দ। তাই আমরা চেয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন সিটগুলো ভালোভাবে বণ্টন করে, কিন্তু সিনিয়ররা জানালার দুই পাশের সিটে আর জুনিয়ররা দরজার দুই পাশের সিটে উঠবে, এটি কোনো যৌক্তিকতা হতে পারে না।
‘সিট অন্যভাবেও বণ্টন করা যেত। এমন নির্দেশনায় অনেকেই অসন্তুষ্ট।’
একই বিভাগের ছাত্রী লাকী আক্তার বলেন, ‘নির্দেশনায় বলা হয়েছে জুনিয়র দুজন যদি একই শিক্ষাবর্ষের হয় তবে রেজাল্ট যার বেশি থাকবে সে ডানপাশের সিটে উঠতে পারবে। তাহলে যাদের একটু খারাপ রেজাল্ট থাকবে তারা তো কখনও ডানপাশের সিটে উঠতে পারবে না।
‘এমন অযৌক্তিক নির্দেশনা না দিয়ে লটারির মাধ্যমে সিট দেয়া হলেও সবাই সন্তুষ্ট থাকত।’