রায়ে নয়, রায় কার্যকর হলে তবেই সন্তুষ্টি মিলবে বলে জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস।
তিনি জানান, দুই প্রধান আসামির ফাঁসির রায়ের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে, কিন্তু সাতজনের খালাস নিয়ে আছে অসন্তোষ।
কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল সোমবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এ রায় দেন।
বহুল আলোচিত এই মামলায় রায় ঘোষণার সময় সকাল থেকেই কক্সবাজার আদালতে ছিলেন মামলার বাদী শারমিন। রায়ের পরপর আদালত থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
শারমিন বলেন, ‘প্রত্যাশা ছিল মামলার প্রধান দুই আসামির যেন সর্বোচ্চ সাজা হয়। সেটা পূরণ হয়েছে। তবে সাতজনকে যে খালাস দেয়া হলো, আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, তাদেরও কিছুটা দায়বদ্ধতা ছিল। একেবারেই যে দায়বদ্ধতা ছিল না তা না। সে ক্ষেত্রে হয়তো তাদের কিছু সাজা হতে পারত বলে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়।
‘আর সন্তুষ্টির কথা যদি বলেন, সন্তুষ্টি সেদিনই হবে যেদিন রায়টি কার্যকর হবে।’
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলমও সাত আসামির খালাসে অসন্তুষ্টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এ রায়ে আমরা আংশিক সন্তুষ্ট। কারণ যে সাতজনকে খালাস দেয়া হয়েছে তাদের বেশির ভাগই যাবজ্জীবন যাদের হয়েছে, তাদের সম-অপরাধী। তাই এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।’
সিনহা হত্যা মামলার রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম। ছবি: নিউজবাংলা২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় মামলা করেন সিনহার বোন শারমিন। আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতসহ ১৫ জনকে।
মামলা রায়ে সোমবার মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় লিয়াকত ও প্রদীপকে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, নুরুল আমিন, নিয়াজ উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিনকে।
আর মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল রাজীব ও কনস্টেবল মো. আব্দুল্লাহ এবং থানা পুলিশের কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও লিটন মিয়াকে।