বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাঙাভাব স্থায়ী হতে না হতেই ফের সংশোধন

  •    
  • ৩১ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:১৫

গত বছরের শেষ সপ্তাহ আর নতুন বছরের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৭৫.৮১ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পর হাত গুটিয়ে থাকা বিনিয়োগকারীরা ফিরতে থাকে। তবে গত সপ্তাহে বাজার উঠানামা করতে থাকায় আবার তৈরি হয় বিভ্রান্তি। কমে যায় লেনদেন। এক পর্যায়ে সূচক ৭ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে রোববার। সেটি আরও কমে যাওয়ায় নতুন করে হতাশা তৈরি হয়েছে।

সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া দীর্ঘ সংশোধনের ক্ষতি কাটিয়ে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে পুঁজিবাজারে যে চাঙাভাব দেখা দিয়েছিল, সেটি স্থায়ী হতে না হতেই আবার দর সংশোধনের আভাস। নতুন বছরে প্রথমবারের মতো টানা চার কর্মদিবস সূচকের পতন দেখল বিনিয়োগকারীরা।

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার ৩৫.৯৯ পয়েন্টের পর দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমল ৬৫.২৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ নতুন সপ্তাহের দুই দিনেই সূচক পড়ল ১০১.২৫ পয়েন্ট। চার দিনে কমল ১০৬.২৮ পয়েন্ট।

গত বছরের শেষ সপ্তাহ আর নতুন বছরের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৭৫.৮১ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পর হাত গুটিয়ে থাকা বিনিয়োগকারীরা ফিরতে থাকে। তবে গত সপ্তাহে বাজার উঠানামা করতে থাকায় আবার তৈরি হয় বিভ্রান্তি। কমে যায় লেনদেন। এক পর্যায়ে সূচক ৭ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে রোববার। সেটি আরও কমে গিয়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৬৯২৬.২৯ পয়েন্ট।

সূচকের সঙ্গে সোমবার লেনদেনেও টানা লেগেছে। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১২০ কোটি টাকা। চলতি সপ্তাহের প্রথমদিন রোববার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩৩৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। সেটি কমে হয়েছে ১ হাজার ২১৫ কোটি ১ লাখ টাকা। সোমবার লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩৩৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

তবে লেনদেন ও সূচকের এমন অবস্থাকে এখনও স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন ব্র্যাক ইপিএল সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রুত কুমার সরকার। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বছরের নভেম্বর ডিসেম্বর সময়ে সূচকের যে পরিমাণ পতন ছিল তার অনেকটাই পূরণ হয়েছে জানুয়ারিতে। হিসাব করে দেখা হলে জানুয়ারির বেশিরভাগ সময়ই সূচকের উত্থান ছিল। ফলে শেয়ার তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।

‘আশার বিষয় হচ্ছে সূচক যে অবস্থায় থাকুক না কেন লেনদেন হাজার কোটিতে স্থির আছে। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারকে স্বাভাবিকই বলা চলে। আর মূল্য সংশোধনও পুঁজিবাজারেরই একটি অংশ।’

আগের দিনের মতোই বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। ৭২টি কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ার বিপরীতে কমেছে ২৬৪টির, দর পাল্টায়নি ৪৪টি কোম্পানির।

প্রধান খাতগুলোর মধ্যে এমন কোনোটি ছিল না যেটিতে চাঙাভাব দেখা গেছে। প্রকৌশল খাতে ৩৪ শতাংশ কোম্পানির, সাধারণ বিমা খাতের ২০ শতাংশ আর ব্যাংকের ১৮ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে।

দীর্ঘদিন পর লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে প্রকৌশল খাত। পরের অবস্থানগুলো ছিল বস্ত্র, ব্যাংক, ওষুধ ও রসায়ন এবং বিবিধ খাত।

সূচকের পতন যেসব কোম্পানির কারণে

সূচক সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। চলতি অর্থবছরের দুই প্রান্তিকে গত অর্থবছরের চেয়ে বেশি আয় করার তথ্য জানানোর পরও কোম্পানিটি দর হারাচ্ছে। অথচ গত বছর কোম্পানিটির শেয়ারদর ১০ গুণেরও বেশি বেড়েছে।

Caption

এই কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ৩.২৪ শতাংশ। এ কারণে সূচক কমেছে ৮.২ পয়েন্ট।

তারপরই আছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশ-আইসিবি। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর ৩.৬৪ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৭.৩৯ পয়েন্ট। তৃতীয় অবস্থানে থাকা টেলিকম খাতের রবির দর ১.৩২ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৪.৯ পয়েন্ট।

এছাড়া বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দর পতনে সূচক কমেছে ৪.৩৫ পয়েন্ট, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এমজেএল বাংলাদেশ, ফরচুন, ওয়ালটনের শেয়ার দর কমায় সোমবার ডিএসইএক্স কমেছে ১২.৬৭ পয়েন্ট।

এছাড়া বিকন ফার্মা ২.৩৩ পয়েন্ট ও তিতাস গ্যাস ১.৮৫ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে।

সব মিলিয়ে ১০টি কোম্পানিই সূচক কমিয়েছে ৪১.৬৯ পয়েন্ট।

বিপরীতে যেসব কোম্পানি সূচকে পয়েন্ট যোগ করতে পেরেছে, সেগুলোর অবদান খুব একটি বেশি ছিল না।

সবচেয়ে বেশি ৪.৮০ পয়েন্ট যোগ করতে পেরেছে গ্রামীণ ফোন। কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ০.৫৪ শতাংশ।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইউনাইটেড পাওয়ারের দর ১.১৯ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ৩.২৫ পয়েন্ট।

এই কোম্পানিগুলো সূচকে কিছুটা পয়েন্ট যোগ করতে পেরেছে

বার্জার পেইন্টস, ফারইস্ট লাইফ, ন্যাশনাল পলিমার, এসিআই ফরমুলেশন, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল ও আমান ফিড কিছু পয়েন্ট যোগ করেছে। সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি যোগ করতে পেরেছে ১৩.৮২ পয়েন্ট।

দর বৃদ্ধির ১০ কোম্পানি

এই তালিকার শীর্ষের দুটি কোম্পানিই নতুন তালিকাভুক্ত।

এর মধ্যে বিডি থাই ফুডের শেয়ারদর বেড়েছে ১০ শতাংশ। তবে কেবল ৬ হাজার ৩১৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

আরেক নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৯.৯৬। এতে ২৮ টাকা ১০ পয়সার শেয়ার পৌঁছেছে ৩০ টাকা ৯০ পয়সায়।

ন্যাশনাল পলিমারের শেয়ারদর রোববারের পর সোমবারও বেড়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণে। ৯.৯৪ শতাংশ বেড়ে ৫৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে হয়েছে ৬৩ টাকা।

সোমবার খাতওয়ারি লেনদেনের চিত্র

পর পর দুই দিন সর্বোচ্চ সীমায় লেনদেন হওয়ার পর তৃতীয় কর্মদিবসে বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমসের শেয়ার দর বেড়েছে ৮.২৬ শতাংশ।

বিডি ল্যাম্পসের দর বেড়েছে ৮.২৩ শতাংশ। কোম্পানিটির ৪ লাখ ৬৯ হাজার ১৩৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৩ কোটি ৭০ লাখ টাকায়।

লোকসানের বৃত্ত ভেঙে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা করা সোনারগাঁও টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৬.২৭ শতাংশ।

পাঁচ শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে দুটি কোম্পানি। এগুলো হচ্ছে আমরা টেকনোলজি ও ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

চার শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, এসিআই ফরমুলেশন, কাট্টালি টেক্সটাইল।

দর পতনের ১০ কোম্পানি

এই তালিকার শীর্ষে ছিল ন্যাশনাল ফিড মিলস। ৮.৭৮ শতাংশ দর পতনে ২০ টাকা ৫০ পয়সার শেয়ার নেমে এসেছে ১৮ টাকা ৭০ পয়সায়।

দ্বিতীয় স্থানে ছিল ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির দর ৮.৭২ শতাংশ কমেছে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফরচুন সুজের শেয়ার দর কমেছে ৭.৯২ শতাংশ।

মেঘনা পেট লিমিটেডের শেয়ার দর ৭.৬৯ শতাংশ, সাফকো স্পিনিংয়ের দর ৬.৪৬ শতাংশ, সিমটেক্সের দর ৬.৩১ শতাংশ, এমজেএল বিডির দর ৫.৩৭ শতাংশ এবং হা ওয়েল টেক্সটাইলের দর কমেছে ৫.৩৫ শতাংশ।

এছাড়া খান ব্রাদার পিপি ওভেনের দর ৪.৬৯ শতাংশ। ওরিয়ন ইনফিউশন এবং ফার্মা এইডের দর কমেছে ৪.৪৭ শতাংশ।

লেনদেনে সেরা ১০

সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে নতুন তালিকাভুক্ত ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ার। ৯০ কোটি ৩২ লাখ টাকায় ৬ কোটি ৫৯ লাখ ৩১ হাজার ৭৯৮টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের লেনদেন হয়েছে ৬৫ কোটি ১১ লাখ টাকা।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫০ কোটি ২০ লাখ টাকা। ন্যাশনাল পলিমারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫০ কোটি ২০ লাখ টাকার।

কুইন সাউথ টেক্সটাইলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৮ টাকা ৪৪ লাখ টাকার। ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকার।

সাইফ পাওয়ারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকার। এ তালিকায় আছে বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, মালেক স্পিনিং, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সও।

এ বিভাগের আরো খবর