বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আয় বাড়ার তথ্যেও দরপতন, সূচক আবার ৭ হাজারের নিচে

  •    
  • ৩০ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:২২

বছরের শুরুতে চাঙা হয়ে ওঠা পুঁজিবাজার প্রথম মাসের শেষ দিকে আবার কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি করছে। গত বছরের শেষ দিকে বিনিয়োগকারীরা এমন বিভ্রান্তির সময় শেয়ার না কিনে অপেক্ষায় ছিলেন, কেউ শেয়ার কম দামে ছেড়ে দিয়েছেন আরও কমে যাবে এমন শঙ্কায়। এর ফলে ঘটে দরপতন, যে বৃত্ত ভাঙার আভাস দেখা গিয়েছিল বছরের শেষ সপ্তাহ থেকে।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশ- আইসিবি চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস বাড়াতে পেরেছে ১২৫ শতাংশ। এই তথ্য যেদিন ‍পুঁজিবাজারে প্রকাশ হলো, সেদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর হারাল ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।

বিকন ফার্মার ক্ষেত্রেও একই চিত্র। কোম্পানিটি অর্ধবার্ষিক হিসাবে আয় দ্বিগুণেরও বেশি বাড়াতে পেরেছে। এই তথ্য প্রকাশের দিন কোম্পানিটির শেয়ারদর কমল ৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি পাওয়ার গ্রিডের আয় বেড়েছে ১০ শতাংশের মতো। আর কোম্পানিটির শেয়ারদর হারিয়েছে ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস যেদিন বছরের দুই প্রান্তিকে ৪৪ শতাংশ আয় বাড়ানোর তথ্য জানাল, সেদিন কোম্পানটির শেয়ারদর হারাল ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।

কেবল এ চারটি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস পুঁজিবাজারের সূচক কমেছে ৩৫ পয়েন্ট।

জুনে অর্থবছর শেষ হয় এমন কোম্পানিগুলো কয়েক দিন ধরেই তাদের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আয়ের তথ্য জানাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলো বেশ ভালো করছে। বেশির ভাগের আয়ই বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।

রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

আয় বাড়লে শেয়ারদর সাধারণত বাড়ে। তবে বছরের শুরুতে চাঙা হয়ে ওঠা পুঁজিবাজার প্রথম মাসের শেষ দিকে আবার কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি করছে। গত বছরের শেষ দিকে বিনিয়োগকারীরা এমন বিভ্রান্তির সময় শেয়ার না কিনে অপেক্ষায় ছিলেন, কেউ শেয়ার কম দামে ছেড়ে দিয়েছেন আরও কমে যাবে এমন শঙ্কায়। এর ফলে ঘটে দরপতন, যে বৃত্ত ভাঙার আভাস দেখা গিয়েছিল বছরের শেষ সপ্তাহ থেকে।

তবে গত সপ্তাহেই বাজারে দেখা দেয় ধীরগতি। সূচক উঠতেই পারছিল না। এর মধ্যে নতুন সপ্তাহের প্রথম দিনে লেনদেনের চিত্র আবার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হতাশা তৈরি করেছে।

১১ কর্মদিবস পর সূচক আবার ৭ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে গেছে। লেনদেন কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৮টির, কমেছে ২২৯টির। আর দর আগের দিনের মতোই আছে ৩৩টির।

লেনদেন হয়েছে মোট ১ হাজার ৩৩৩টি টাকা। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২১৯ কোটি টাকা। লেনদেন বেড়েছে ১১৪ কোটি টাকা।

খাতভিত্তিক সবচেয়ে ভালো অবস্থানে ছিল সাধারণ বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। বিবিধ খাতেও বেশির ভাগ কোম্পানির দর বেড়েছে।

প্রধান বাকি সব খাতেই শেয়ারদর কমেছে। বস্ত্র খাতে ১৫ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ৭২ শতাংশর। ব্যাংক, আর্থিক জ্বালানি, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, প্রকৌশল খাতেও গেছে বাজে দিন।

লেনদেন সবচেয়ে বেশি হয়েছে বস্ত্র খাতে। পরের অবস্থান যথাক্রমে বিবিধ, প্রকৌশল এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি।

যেসব কোম্পানির দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে

রোববার আইসিবি’র শেয়ার দর ৬.১৫ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে সবচেয়ে বেশি ১১.৭৫ পয়েন্ট। বিকনফার্মার শেয়ার দর ৬.০৪ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৫.৭ পয়েন্ট। পাওয়ার গ্রিডের শেয়ার দর কমে আসায় সূচক কমেছে ৩.৬৬ পয়েন্ট।

যে ১০টি কোম্পানি সূচক সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে, তার মধ্যে তিনটি কোম্পানি অর্ধবার্ষিকে আয় বেশ ভালো বাড়াতে পেরেছে

এদিন বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ব্র্যাক ব্যাংক, তিতাস গ্যাসের শেয়ার দর কমেছে সূচক কমেছে ৭.৮৩ পয়েন্ট।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের ১.৬১ পয়েন্ট, বেক্সিমকো ফার্মার ১.৪৮ পয়েন্ট ও ইউনিলিভার কনজ্যুমারের ১.২৪ পয়েন্ট কমেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানিই সূচক ফেলেছে ৩৩.২৭ পয়েন্ট।

অন্যদিকে শেয়ার দর বাড়াতে প্রধান ভূমিকায় ছিল গ্রামীণফোন। শেয়ারদর ০.৭৪ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ৫.৪২ পয়েন্ট।

লাফার্জ হোলসিম, বার্জার পেইন্টস, ইউনিয়ন ব্যাংক, একমি ল্যবরেটরিজ, ওরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো লিমিটেড, লিন্ডে বিডি, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ও এনভয় টেক্সটাইলের কারণেও সূচক কমেছে খানিকটা।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচকে যোগ করতে পেরেছে ১৭.৬১ পয়েন্ট।

দর বৃদ্ধির ১০ কোম্পানি

টানা দুই দিন দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায় ছুঁয়ে লেনদেন হলো বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমসের। দুই দিনে শেয়ারদর ২০ টাকা থেকে হয়েছে ২৪ টাকা ২০ পয়সা। বৃহস্পতিবার ১০ শতাংশ বেড়ে দাম দাঁড়ায় ২২ টাকা, সেটি আরও ১০ শতাংশ বাড়ে রোববার।

ন্যাশনাল পলিমারের শেয়ার দর বেড়েছে যতটুকু বাড়া সম্ভব ততটুকুই। ৯.৯৮ শতাংশ বেড়ে শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৫৭ টাকা ৩০ পয়সায়।

তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তৃতীয় কর্মদিবসেও সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়েছে ইউনিয়ন ব্যাংকের দর। নতুন তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স ও বিডি থাই ফুডসের দরও বেড়েছে প্রায় একই পরিমাণে।

আট শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে দুটি কোম্পানির। এর মধ্যে কুইন সাউথ টেক্সটাইলের দর ৮.৫৮ শতাংশ ও জেমিনি সি ফুডসের দর ৮.৫২ শতাংশ দর বেড়েছে।

রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে খাতওয়ারি লেনদেনের চিত্র

দর বৃদ্ধিতে অষ্টম স্থানে থাকা ফার্মা এইডের দর বেড়েছে ৭.৪২ শতাংশ।

এছাড়া অগ্নি সিস্টেমসের দর ৬.১৫ শতাংশ আর ন্যাশনাল টি কোম্পানির দর ৬.০৪ শতাংশ বেড়েছে।

দর পতনের ১০ কোম্পানি

দর পতনের শীর্ষে ছিল শমরিতা হসপিটালের ৯.৯৫ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার দর ১১২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১০১ টাকা ৩০ পয়সা।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা হামিদ ফেব্রিক্সের দর কমেছে ৮.২৪ শতাংশ। অ্যাকটিভ ফাইনের দর কমেছে ৭.১৯ শতাংশ। মালেক স্পিনিংয়ের দর কমেছে ৭.০৮ শতাংশ।

ছয় শতাংশের বেশি কমেছে চারটি কোম্পানির দর। এর মধ্যে জাহিন টেক্সটাইলের কমেছে ৬.৫৭ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টসের কমেছে ৬.৫৩ শতাংশ, গ্লোবাল হ্যাভি ক্যামিকেলের কমেছে ৬.৩৮ শতাংশ আর আইসিবির দর কমেছে ৬.১৫ শতাংশ।

বেঙ্গল উইসডন, বিকনফার্মা, সিনোবাংলা ছিল দরপতনের শীর্ষ দশে।

লেনদেনে সেরা ১০ কোম্পানি

রোববার সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের ১০৫ কোটি ৭ লাখ টাকার। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৬৭ লাখ ৭৭ হাজার ৫৫টি শেয়ার।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনে লেনদেন হয়েছে ৮৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা পাওয়ার গ্রিডে লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

কুইন সাউথ টেক্সটাইলে ৪১ কোটি ১৮ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মায় ৩৮ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

সাইফ পাওয়ারটেক ও ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ে লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। মালেক স্পিনিং, আরএকে সিরামিক, মতিন স্পিনিংও ছিল এই তালিকায়।

এ বিভাগের আরো খবর