দেশে নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৩৭৮ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যা গত চার দিন পর শনাক্তের সংখ্যা ৫ হাজার কমে ১০ হাজারের ঘরে এসেছে।
পরীক্ষার তুলনায় এক দিনে শনাক্তের হারও কমে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ১০।
শনিবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টার এই হিসাব দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সময়ে করোনা সংক্রমণে মারা গেছেন ২১ জন।
মৃত্যুর এই হার গত ৫ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। সেদিন ২৩ জনের মৃত্যুর সংবাদ দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এর আগের দিন শুক্রবার সংক্রমণ ধরা পড়ে ১৫ হাজার ৪৪০ জনের দেহে। বৃহস্পতিবার রোগী শনাক্ত হন ১৫ হাজার ৮০৭ জন। এর আগে বুধবার ১৫ হাজার ৫২৭ ও মঙ্গলবার ১৬ হাজার ৩৩ জনের দেহে করোনা ধরা পড়ে। এ ছাড়া টানা সাত দিন শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের ওপরে থেকেছে।
টানা এক সপ্তাহ শনাক্তের হার ৩০-এর ওপর
গত রোববার পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ৩১ দশমিক ২৯ শতাংশ। পরদিন সোমবার ৩২ দশমিক ৩৭, মঙ্গলবার ৩২ দশমিক ৪০, বুধবার ৩১ দশমিক ৬৪ ও বৃহস্পতিবার ৩১ দশমিক ৯৮ শতাংশ শনাক্ত হয়।
সর্বশেষ শুক্রবার পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। দেশে করোনা শনাক্ত হারে এটিই ছিল এ-যাবৎকালের সর্বোচ্চ।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এক দিনে নমুনা পরীক্ষা কমেছে ১২ হাজার। সে কারণে শনাক্তের সংখ্যাও কমে এসেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৬৫টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৩৭৩টি। এর আগে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয় গত বছরের ২৬ জুলাই, ৫০ হাজার ৯৫২টি।
বর্তমানে ওমিক্রন দ্রুত ছাড়ানোর কারণে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়ানোর কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
দেশে এ পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৩৭৩ জনের দেহে। এই ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৩০৯ জনের।
সর্বশেষ মারা যাওয়া ২১ জনের মধ্যে চল্লিশোর্ধ্ব ৯, ষাটোর্ধ্ব ৫, সত্তরোর্ধ্ব ৪ ও অশীতিপর ৩ জন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় ঢাকা বিভাগে, ১২ জনের। এ ছাড়া চট্টগ্রাম খুলনা ও রংপুরে দুজন করে মারা গেছেন। রাজশাহী ও ময়মনসিংহে একজন করে মারা গেছেন।
গত এক দিনে শনাক্তের প্রায় অর্ধেকই ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ২১ হাজার ২৪১টি নমুনা পরীক্ষায় ৬ হাজার৩৭৯ জন পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন।
গত বছর অক্টোবরের শুরুর দিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে এলেও জানুয়ারি থেকে আবার শনাক্তের হার বাড়তে থাকে। গত ৭ জানুয়ারি থেকে করোনার সংক্রমণ, শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। ২৪ দিন ধরে করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের ওপর রয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম ধরা পড়ে ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনটি ঢেউ এসেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের একপর্যায়ে দেশে শাটডাউন নামে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়। ওই সময় বাড়ির বাইরে গেলে জরিমানাও করা হচ্ছিল।
এবার বিধিনিষেধ দিলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা প্রতিপালনে তেমন কঠোরতা নেই।