প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার জ্বর ও ফুসফুসে সংক্রমণ রয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
শিল্পীর শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ায় তাকে লেক গার্ডেনের বাড়ি থেকে গ্রিন করিডোর করে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ৯০ বছরের বেশি বয়সী শিল্পীর বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া ২৩ জানুয়ারি বাথরুমে পড়ে গিয়ে কোমরে ব্যথা পান তিনি। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তার শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ থাকায় আরটিপিসিআর পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের চিকিৎসায় চিকিৎসক সোমনাথ কুণ্ডুর নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। ওই দলে ফুসফুস, কার্ডিওলজিস্ট ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন।
শিল্পীকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভারত সরকারের দেয়া পদ্মশ্রী খেতাব ফিরিয়ে দেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। বলেন, ‘কোন যন্ত্রণা থেকে পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দিয়েছি বাংলার শ্রোতারা বুঝতে পারবেন।’
বুধবার সন্ধ্যা থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিল্পীকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, ‘কেন্দ্রের এই অপমান মেনে নিতে পারেননি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।’
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কেন্দ্রের দেয়া পদ্মশ্রী সম্মান ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এই অপমানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবী মহল।
বুধবার প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগীতশিল্পী কবীর সুমন বলেন, বিদ্বেষ থেকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে পদ্মশ্রী সম্মান দেয়া হয়েছে। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে অপমান করেছে কেন্দ্র। এই বয়সে এসে ধাক্কা খেলেন।’
সাহিত্যিক আবুল বাশার বলেন, ‘প্রকৃত প্রতিভাকে অসম্মান করেছে কেন্দ্র। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে অতিক্রম করার মতো প্রতিভা ভারতবর্ষে নেই। রাষ্ট্রের সরকার কেন বুঝতে চাইবে না, প্রকৃত শিল্পীকে যোগ্য মর্যাদা দিতে হয়? ওকে সঠিকভাবে সম্মান জানালে, কেন্দ্রীয় সরকারই সম্মানিত হতো। কেন্দ্রে বসে যারা দেশ চালাচ্ছেন, তারা যে সংস্কৃতির কিছু বোঝেন না তা-ই বুঝিয়ে দিলেন।’